আধ্যাত্মিকতার বাচালতা চলে না। এখন বোধ হয় সাধুদের কথায় কেউ কান দেয় না, বোধ হয় এখন দেশে আর জাতিভেদ নাই। আমি ভাবতাম আমি যেন অনেক বৎসর আগে দেশ ছেড়ে এসেছি। কিন্তু সুখের চিন্তা মিলিয়ে যেত যখনই অতলান্তিকের ঢেউ লেগে জাহাজ কেঁপে উঠত।
দেখতে দেখতে পাঁচটা দিন জাহাজে কেটে গেল। বিরাট সমুদ্র আর অন্তহীন আকাশ দেখে মন একঘেয়ে হয়ে উঠছিল। রাত এখনও কাটেনি। সিনেমা দেখে অনেকেই স্মোকিং রুমে এসে বসেছিল। কেউ হুইস্কি, কেউ বিয়ারের গ্লাস সামনে রেখে গল্প করছিল। আমিও এক গ্লাস বিয়ারের আদেশ দিয়ে একটা খালি টেবিলে গিয়ে বসেছিলাম। আলাদা বসলাম এই ভেবে যে, এখন গভীর রাত, অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েছে। যদি ওদের টেবিলে গিয়ে বসি আর মদের নশায় শ্বেতবর্ণাভিমান ওদের জেগে ওঠে, তবে আমাকে লড়তে হবে নিশ্চয়ই। কিন্তু এতগুলি লোকের সংগে আমি কোন মতেই পেরে উঠব না।
মিনিট দুই পরই একটি স্কচ্ম্যান্ এসে আমারই টেবিলের কাছে একখানা ছোট চেয়ার টেনে এনে বসল এবং বলল, আমার কোন অসুবিধা হবে কি? আমি বললাম, “নিশ্চয়ই না!” স্কচ্ম্যানটি দক্ষিণ আফ্রিকার বাসিন্দা, ডাচ ভাষা বেশ ভালই জানে। সে ডাচ ভাষায় কথা বলতে আরম্ভ করল। ডাচ আর স্কচ্ ভাষায় যত মিল আছে, ইংলিশ এবং স্কচ্ ভাষায় তত মিল নাই। স্কচ্ লোকটিকে জানিয়ে দিলাম, আমি ডাচ ভাষা মোটেই জানি না এবং এ জীবনে আর ডাচ ভাষা শিখবার বাসনাও রাখি না। আমার কথা শুনে স্কচ্ম্যান্ বলল, “আপনার কথায় মনে হচ্ছে আপনি প্রবৃটিশ।” আমি বললাম, “হয়ত আপনি ভাবছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছি, অনেক বৃটিশের পাল্লায় পড়েছি, তাই আমি প্রবৃটিশ।” স্কচ্ম্যানটি হেসে বলল, “আপনি এখন কোন্ দেশের
২