পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



২২
আজকের আমেরিকা

 মাথার উপরে স্বচ্ছ নীল আকাশ। সূর্য ডান দিক হতে উঠেছে এবং বাঁ দিকে অস্ত যাচ্ছে। নীচে সমুদ্র শান্ত তাতে কোনওরূপ ঢেউ নাই―আমাদের দেশের বড় পুষ্করিণীর জলের মত ধীর এবং স্থির। আমরা সেই দৃশ্যই দেখছিলাম। মাঝে মাঝে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ো মাছ জাহাজের কাছে জল থেকে উঠে অনেক দূরে চলে যাচ্ছিল এবং আমাদের দৃষ্টি সেদিকে আকর্ষণ করছিল। বাস্তবিক দিনটা কাটছিল আনন্দেই। কিন্তু গত রাত্রে একটা বই পড়েছিলাম তাতে লেখক সমুদ্রের ভীষণতার কথা লিখেছিলেন। সমুদ্রের সংগে যাদের সাক্ষাৎ পরিচয় নাই এরূপ লেখক সমুদ্রের কত কাল্পনিক কাহিনীই না লিখেছেন। তাদের কল্পনার চোখের সামনে সমুদ্র সর্বদাই ভয়সংকুল হয়ে আছে, কল্পিত দৈত্যদানবের মত কত অতিকায় প্রাণী সমুদ্র তোলপাড় করছে। আমি বাস্তব সমুদ্রের আর কল্পিত কাহিনীর তুলনা করছিলাম এবং ভাবছিলাম, উচ্ছ্বাস ভাবপ্রবণতা কবিত্ব―এ সকল আর যার জন্যই হোক আমার মত বাস্তববাদীদের জন্য নয়। আমার ভাবনার অন্ত ছিল না, কখন যে আমাদের পাদরী আমার কাছে এসে বসেছিলেন তা আমি বুঝতে পারিনি। পাদরী তাঁর ডান হাতটা আমার কাঁধের উপর রাখতেই আমার দৃষ্টি তাঁর দিকে গেল।

 পাদরী বললেন, “ভাববেন না, আমরা কয়েক দিনের মধ্যেই সাউথ্‌হাম্‌টনে যাব, ভগবান আমাদের সাহায্য করবেন।” পাদরীকে বললাম, “মহাশয় দয়া করে ভগবান এবং তাঁর পুত্রদের কথা আমাকে শুনাবেন না। আমার মংগলামংগল আমার হাতে। ভগবান এবং তাঁর প্রেরিত পুরুষগণ আমাকে কোন সাহায্য করতে পারবেন না। এ সকল কথার উৎপত্তি হল ভয় হতে এবং এ সকল কথা শুধু ভয়েরই সৃষ্টি করে। সাময়িক উত্তেজনাও আনে বটে মদের নেশার মত, কিন্তু এর পর যখন মন দমে যায় তখন আর বুঝতে পারা যায় না কোথায় চলেছি। অতএব ক্ষমা করুন। কয়েকটি