পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



৩২
আজকের আমেরিকা

রাত্রিটা কাটিয়ে আসি। গিয়ে দেখি দরজায় খড়ি দিয়ে লেখা রয়েছে, ‘চাবি উপরে আছে’। আমি উপরে উঠে চাবি নিয়ে এসে দরজা খুলে তিনটা বেন্‌চ একত্র করে হাতটা বালিশ করে মহানন্দে শুয়ে পড়লাম। পরিশ্রম করলে আপনা হতে ঘুম আসে। ঘুম এসে আমার সকল ব্যথার অবসান করেছিল।

 অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম। বোধ হয় রাত্রি তখন এগারটা হবে, একটি মহিলা এসে আমাকে জাগালেন। মহিলার সম্মান রক্ষা করা পুরুষের কর্তব্য। তৎক্ষণাৎ বিছানা ছেড়ে মহিলাকে সম্মান জানালাম। মহিলা আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করলেন। এভাবে পরিচয় জিজ্ঞাসা করার নিয়ম যদিও তাদের মাঝে নাই তবুও আমার পরিচয় চেয়েছিলেন এবং আমার পরিচয় পেয়ে মহিলাটি আমাকে বসতে বলেই কাছের বাড়িতে গিয়ে একটি যুবককে ডেকে এনে আমার সংগে তার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। যুবক অল্প সময়ের মধ্যেই আমার সংগে আলাপ করে নিয়ে বললেন, “এই তো মোটে সন্ধ্যা হল, চলুন একটু বেড়িয়ে আসি, আজ রাত্রে আর বাসা ভাড়া হবে না।” উভয়ে কাছের ছোট রেস্তোরাঁ থেকে চা খেয়ে টিউব ষ্টেশনে নেমে পড়লাম এবং ট্রেনে হাইড পার্কের কাছে এসে উঠলাম।

 হাইড পার্কে অনেক দিন বেড়িয়েছি। হাইড পার্কের যদি তুলনা দিতে হয়, তবে একমাত্র হাইড পার্কই তার তুলনা। লণ্ডনের হাইড পার্ক স্বাধীনতার কেন্দ্রস্থল। ছোট স্টেণ্ডএর উপর দাঁড়িয়ে যা ইচ্ছা বলে যাও, কেউ কিছু বলবে না। সেখানে যীশু, মোহম্মদ, বুদ্ধ, শঙ্করের যেমন শ্রাদ্ধ হয়, তেমনি হয় চেম্বারলেন, দালাদিয়ের, মুসোলিনী, হিটলার ও স্টালিন প্রভৃতির। শুনতে ভাল লাগে শোন, নতুবা পথ দেখ, কারণ এটা হাইড পার্ক, বাক্‌-স্বাধীনতার পীঠস্থান। ভারতের সংবাদপত্র ধর্ম নিয়ে কথা