পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

দিবে; কিন্তু তাহার বিনিময়ে হয়তো আমাদের তাহাদের কবলে পড়িতে হইবে। ইহা আমি চাহি না। আমরা যতদূর সম্ভব নিজেদের চেষ্টায় আমাদের স্বাধীনতা আনিব। বিদেশীর সাহায্য যতটা অযাচিতভাবে পাই লইতে বাধা নাই; কিন্তু আমাদের নিজেদের সামর্থ্যের উপর নির্ভর করিয়া চলিতে হইবে। ভারতীয় স্বাধীনতা সঙ্ঘ গঠনের ফলে জাপ-অধিকৃত অঞ্চলে আপনারা অন্যান্য জাতি অপেক্ষা বেশী সুবিধা ভোগ করিতেছেন এবং অর্থ উপার্জ্জন করিয়াছেন। আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্ট আপনাদের ধনসম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করিয়াছে। আমি আশা করি আপনাদের অর্থের শতকরা দশ ভাগ মাত্র আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টকে দান করিবেন।’

 সভার শেষে নেতাজীর গলার মালা এক লক্ষ টাকায় বিক্রীত হইল। আশা হইতেছে অনেক টাকা উঠিবে। এই অঞ্চলের ভারতবাসীদের যে এত টাকা আছে তাহা আমার ধারণা ছিল না।

২৬শে অক্টোবর ১৯৪৩:

 জানকী দেবীর সহিত আলাপ ছিল না—আজ হইল। সুন্দরী না হইলেও—চেহারায় চটক্ আছে। দেহের কমনীয় রেখাগুলিতে স্বাস্থ্যের বলিষ্ঠতা। উজ্জ্বল টানা টানা চোখ—মাথায় বব্-করা কোঁক্ড়া কালো চুল। ধব্‌ধবে ফর্শা রঙ। পরণে ফুল্ প্যাণ্ট, খাকি সার্ট্ আর মাথায় টুপি বাঁকাভাবে পরা।

 ব্যানার্জির বাসায় চায়ের নিমন্ত্রণ ছিল। চায়ের কাপের ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকাইয়া উঠিতেছিল। তাহার ফাঁকে জানকী দেবীকে দেখিয়া লইলাম। ফয়া সুন্দরী; কিন্তু সে সৌন্দর্য্যের মধ্যে কিসের যেন একটা অভাব আছে। জানকী দেবী যেন তাহার অপেক্ষা সুন্দরী।