পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
৮৭

 বন্দীশিবির হইতে সাক্ষী এবং অন্যান্যদের সেলাতার শিবিরে লইয়া যাওয়া হয় এবং সেখানে তাহাদের জাতীয় বাহিনীতে যোগ দান করিবার জন্য অনুরোধ করিয়া বক্তৃতা দেওয়া হয়, সাক্ষী অস্বীকার করিলে তাহাকে এবং অন্যান্যদের পৃথক করিয়া সেনানিবাসে রাখা হয়। তারপর, তাহাদের আবার বন্দীশিবিরে লইয়া যাওয়া হয়। দ্বিতীয়বার সাক্ষী এবং তাহার এগারজন সঙ্গীকে একুশ দিন বন্দীশিবিরে রাখা হয়।

 প্রতিদিনই তাহাদের সম্মুখে বক্তৃতা দেওয়া হইত এবং তাহাদের জাতীয় বাহিনীতে যোগ দিতে বলা হইত। শিবিরের অধিনায়ক তাহাদের বলিতেন যে, তাহারা যদি জাতীয় বাহিনীতে যোগ না দেয় তাহা হইলে তাহাদের আগের ন্যায় ব্যবহারই পাইবে। তাহাদের আগের ন্যায় কঠোর পরিশ্রম করিতে হইত। তাহাদের স্বাস্থ্যের ক্রমশঃ অবনতি সত্ত্বেও কোনরূপ চিকিৎসার ব্যবস্থা তাহাদের জন্য করা হয় নাই। তাহাদের জন্য কেবলমাত্র প্রহারের ব্যবস্থাই বলবৎ ছিল। একদিন সাক্ষী তৃষ্ণার্ত্ত হইয়া জল চাহিলে তাহাকে এবং তাহার জনৈক সঙ্গীকে ১৮ ঘা বেত মারা হয়। অসহ্য প্রহারের ফলে তাহারা ‘আল্লাহ ও পীরদের স্মরণ করিলে তাহাদের বলা হইল যে, শিবিরের চৌহদ্দিতে আল্লাহ’ নাই আছে শুধু শিবির কর্ত্তৃপক্ষ।

 বন্দীশিবির হইতে তাহাদের সেলেতার শিবিরে লইয়া যাওয়া হয়। এই শিবিরের “ডি” চিহ্নিত অংশে জাতীয় বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবক দল এবং “ডি১” চিহ্নিত অংশে যাহারা স্বেচ্ছাসেবক নয় তাহারা থাকিত। হালপাতালেও স্বেচ্ছাসেবক দল এবং যাহারা স্বেচ্ছাসেবক নয় তাহাদের আলাদা রাখা হইত। প্রধান ঘাঁটি হইতে মাঝে মাঝে খাদ্য আসিত কিন্তু তাহা কেবল স্বেচ্ছাসেবকদেরই পরিবেশন করা হইত। সাক্ষী সাত আটদিন হাসপাতালে ছিল। হাসপাতাল হইতে তাহাকে পুনরায় সেলেতার শিবিরে লইয়া যাওয়া হয়। এখানেও তাহাকে জাতীয় বাহিনীতে যোগ দিতে বলা হয় কিন্তু সে