পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাতে সুতিষ্কগুহের দ্বারে দাড়াইয়া মোহর দিয়া ভাগিনার মুখ দেখিলেন। জননীর মুখে শুনিয়াছি, আমার মামা আমার মাথা ও কপাল দেখিয়া বলিয়াছিলেন, “আমার এই ভাগিনা বড়লোক হবে।” ক্রমে কৃতিকাঃ হা হহঁতে বাহির হইয়া আসি সাতামহী মাদী ও মাসীদের কোলে বাড়িতে লাগিলাম। বিশেষতঃ আমার মেজ মাসী এক দণ্ড আমাকে কোল হইতে নামাইতেন না। মাতার সহিত মজিলপুরে আগমন।—কিন্তু আমি পৃথিবীতে পদার্পণ করিবামাত্র মাতুল গৃহে ঘোর বিপ্লব উপস্থিত হইল। পূর্বেই বলিয়াছি, আমার মাতামহ মহাশয় স্বীয় অবস্থার উন্নতি করিয়া পৈতৃক ভিটা পরিত্যাগ পূর্ব্বক, তাহার নাতিদূরে একটি দ্বিতল পাকা বাড়ী নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন। ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতের ঐ দ্বিতল বাড়ীটি পাড়ার লোকের চক্ষুঃশূল হইল। এক খণ্ড পতিত জমি ক্রয় করিয়া সেই জমির উপরে ঐ বাড়ীটি নির্ম্মিত হইয়াছিল। কিন্তু ভূমিখণ্ড বহুদিন পতিত অবস্থাতে থাকাতে তাহার উপর দিয়া লোকের যাতায়াতের পথ হইয়া গিয়াছিল। বহু বহু বৎসর ধরিয়া লোকে সেই পথ দিয়া যাতায়াত করিত । কিন্তু মাতামহ যখন তাহা ক্রয় করিয়া, প্রাচীরের দ্বারা আবদ্ধ করিয়া, তদুপরি, গৃহনির্ম্মাণ করিতে প্রবৃত্ত শুইলেন, তখন তাহা লইয়া বিবাদ ও বিষম দলাদলি ও তাহার ফলস্বরূপ মামলা মোকদ্দমা উপস্থিত হইল। তখন প্রতিবেশীগণ আমার মাতুল পরিবারের প্রতি এরূপ উপদ্রব আরম্ভ করিল যে, তঁহারা বাধ্য হইয়া গ্রাম পরিত্যাগ করিয়া কলিকাতায় আসিয়া বাস করিতে বাধ্য হইলেন। সেই সূত্রে আমার ছয় মাস বয়সে জননী আমাকে লইয়া আমাদের বাসগ্রাম মজিলপুরের বাটীতে গেলেন। আমার প্রপিতামহ তখন সকল কর্ম্ম হইতে অবস্থিত হইয়া গৃহে আসিয়া বসিয়াছেন ; চক্ষে দেখেন এস্টনা, কানে শোনেন না। তিনি আমাকে, পাইয়া “আমার বংশধর আসিয়াছে’ বলিয়া মহা