পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

] , দুর্ভিক্ষের অনাথ শিল্পী se কলিকাতায় ফিরিয়া আসি। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে পুনরায় মান্দ্রাজ হইতে ঘন ঘন টেলিগ্রাম আসিতে লাগিল,-আসুন, আসুন, অ্যাসিতেই হইবে। ব্যাপারখানা এই। নববিধানের প্রচারক অমৃতলাল বসু মহাশয় তখন মান্দ্রাজ প্রদেশের নানা স্থানে ভ্রমণ করিয়া মান্দ্রাজে আসিয়াছিলেন । অমনি আমাদের বুচিয়া পাণ্ট লু ভায়া ভয় পাইয়া ঘন ঘন পত্র লিখিতে ও টেলিগ্রাম করিতে আরম্ভ করিলেন, তিনি যে কাজ গড়িয়া তুলিতেছিলেন তাহা বুঝি ভাঙ্গিয়া যায়। এরূপ স্থলে যাওয়া উচিত ছিল কি না সন্দেহ। যাহা হউক। কমিটি আমাকে পাঠাইলেন। গিয়া কার্য্য আরম্ভ করিলাম। অমৃত বাবুর সঙ্গে আমার বহু দিনের আত্মীয়তা, সুতরাং বাড়ীতে র্তাহার সঙ্গে বন্ধু ভাবে মিশিতাম ; কিন্তু প্রকাশ্য ভাবে নববিধান ও সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের বিরোধ চলিল। এই সময়ে আমি The New Dispensation and the Sadharan Brahmo Sa naj oto ইংরাজী পুস্তক রচনা করি। তাহা মান্দ্রাজ হইতে মুদ্রিত ও প্রচারিত হইল। দ্বিতীয় বার মান্দ্রাজে গেলে মান্দ্রাজবাসী ব্রাহ্ম বন্ধু৭াণ তঁহাদের সমাজের সম্পাদক মহাশয়ের বাড়ীর সন্নিকটে একটি বাড়ী ভাড়া লইয়া তাহাতে আমাকে স্থাপন করিয়াছিলেন। আমি তঁহার ভবনে দুই বেলা আহার করিতাম, তঁহার পত্নী ভগিনীর ন্যায় রন্ধন করিয়া আমার নিকট বসিয়া খাওয়াইতেন। আমি সমস্ত দিন পাঠ চিন্তা ও গ্রন্থ রচনাদিতে যাপন করিতাম, বৈকালে সমুদ্র তীরে ভ্রমণ করিতে যাইতাম । দুর্ভিক্ষের অনাথ শিশু —এক দিন আমি এক জন ব্রাহ্ম বন্ধুর সহিত বৈকালে বেড়াইতে বাহির হইয়াছি ; পথে যাইতে যাইতে দেখিলাম, “এক জন প্রাপ্তবয়স্ক লোক একটি অল্পবয়স্ক শিশুকে ভয়ানক প্রহার করিতেছে। শিশুটি অসহায় হইয়া চীৎকার করিয়া কঁাদিতেছে। তাহার। চীৎকার শুনিয়া আমি দাড়াইয়া • গেলাম। মনে করিলাম সে ব্যক্তি শিশুটির পিতা, কোন অপরাধের জন্য বুঝি শাসন করিতেছে।