পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

••8१-४७ ] কুরুর “শেয়ালখাকী” 8) চৌকাঠের উপরে একটা ছিদ্র ছিল, শেয়ালখাকীকে বলা গেল, “শেয়ালখাকি ! এই গর্ত্তের মধ্যে লেজ দিয়ে ব’সে থাক, দেখিস যেন এ জায়গা ছেড়ে উঠিসনে।” তখন আশ্চর্য্য বৈাধ হয় নাই, এখন যত বার ভাবি আশ্চর্য্য বোধ হয়, শেয়ালখাকী কিরূপে আমাদের কথা বুঝিল। সেই ছিদ্রের মধ্যে লেজ দিয়া নিজের পিঠের দ্বারা ছিদ্রটি ঢাকিয়া বসিয়া রহিল। পরে পায়রাদিগকে যখন তাড়া দিতে আরম্ভ করা গেল এবং পায়রাগুলি তার মুখের সন্মুখ দিয়া উড়িয়া যাইতে লাগিল, তখন না জানি শেয়ালখাকীর পক্ষে স্থান ত্যাগ করিয়া পায়রার সঙ্গে ছুটিবার কি প্রলোভনই হইয়া থাকিবে । কিন্তু সে তা করিল না ; আমরা যেরূপ পিঠ দিয়া ছিদ্র ঢাকিয়া স্থির থাকিলাম, সেও সেই প্রকার রহিল। আর একটি ঘটনা। এই ৷—আমাদের বুধী বলিয়া একটা গাভী ছিল। তাহার একটি রাখাল ছিল। শেয়ালখাকী অনেক সময় রাখালের সঙ্গে বুধীকে লইয়া মাঠে যাইত। সমস্ত দিন মাঠে পাকিয়া বৈকালে ঘরে আসিত । এক বার বাবা কি ফারণে রাগ করিয়া রাখালটাকে মারিয়া তাড়াইয়া দিলেন । তখন বুধী ঘরে বাধা পড়িল। তাকে চরায় কে ? এইরূপে দুই এক দিন গেল। পরে আমি বলিলাম, “বাবা, শেয়ালখাকীকে দিলে সে গরু, চরিয়ে আনতে পারে।” শুনিয়া বাবা হাসিলেন, “হঁঃ, কুকুরে আবার গরু চরাবে ” মা শেয়ালখাকীকে চিনিতেন, তিনি তখন আমার কথাতে যোগ দিলেন । তখন শেয়ালখাকীর সঙ্গে গরু পাঠান স্থির হইল। কেমন করিয়া গরু চরাইতে হইবে তাহা শেয়ালখাকীকে বুঝাইয়া দেওয়া গেল। সে গরু লইয়া যাইতে আরম্ভ করিল। এক দিন সন্ধ্যা হইয়া গেল, গরু আর আসে না । বাবা ও মা চিন্তিত হইতে লাগিলেন। অবশেষে দেখা গেল যে, এক শেয়ালখাকী মহা চীৎকার করিতে করিতে আসিতেছে ; সঙ্গে গরু নাই । আসিয়া আমাদের মুখের দিকে চাহিয়া চীৎকার করে, একটু দৌড়িয়া যায়, আবার দাড়ায়,