পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

কানা বলিয়া, সঙ্কীর্ণচেতা, বলিয়া, আর রাশি রাশি হা-হুতাশ উচ্ছ্বাসের প্রবাহ বহাইয়া দিয়াই কি কোন কাজ হইবে? বেদের মধ্যে যখন রূপকের স্থান রহিয়াছে, তখন বুদ্ধি-বিচারের অবকাশ আছে। সুতরাং শুধু উক্তিকেই অকাট্য যুক্তি বলিয়া দাড় করানাে যাইবে না। আমি এই কথাটাই আমার এই ভূমিকায় বলিতে চাহিয়াছি। | অতঃপর হিলর সর্বশ্রেষ্ঠ সংস্কার বিবাহের কথা। ইনি প্রথমেই বলিতেছেন, “হিন্দুর এই পবিত্র বিবাহপদ্ধতি বহু সহস্র বৎসর পূর্বে ঋগ্বেদের সময়ে যেভাবে নিষ্পন্ন হইত, আজও একালের বৈদেশিক সভ্যতার সংঘর্ষেও তাহা অণুমাত্র পরিবর্তিত হয় নাই।” অণুমাত্রও পরিবর্তিত যে হয় নাই, তা নিম্নলিখিত উদাহরণে সুস্পষ্ট করিয়াছেন— | “তখনও বরকে কন্যার গৃহে গিয়া বিবাহ করিতে হইত, এখনও তাহা হইয়া থাকে। আবার বিবাহের পর শশাভাযাত্রা করিয়া, বহুবিধ অলঙ্কারভূষিতা কন্যাকে লইয়া শ্বশুর-দত্ত নানাবিধ যৌতুক সহিত তখনও যেমন বর গৃহে প্রত্যাগমন করিতেন, এখনও সেইরূপ হইয়া থাকে। বিবাহযােগ্যকালে কন্যা-সম্প্রদানের ব্যবস্থা ছিল ; কিন্তু ঐ বয়সের কোন পরিমাণ নির্দিষ্ট নাই। কন্যা শ্বশুরালয়ে আসিয়া কত্রীর স্থান অধিকার করিতেন, এবং শ্বশুর, শাশুড়ী, দেবর ও ননদগণের উপর প্রাধান্য স্থাপন করিতেন অর্থাৎ সকলকে বশ করিতেন।” অতঃপর এই সকল উক্তি সপ্রমাণ করিতে নানাবিধ শ্লোক ও মন্তব্য লিখিয়া দিয়া বােধ করি অসংশয়ে প্রমাণ করিয়া দিয়াছেন, এই সকল আচার-ব্যবহার বৈদিক কালে প্রচলিত ছিলই। ভালই। কিন্তু এই যে বলিয়াছেন—বহু সহস্র বর্ষ পূর্বের বিবাহপদ্ধতি যেমনটি ছিল, আজও এই বৈদেশিক সভ্যতার সংঘর্ষেও ঠিক তেমনটি আছে, ‘অণুমাত্র পরিবর্তিত হয় নাই—ইহার অর্থ হৃদয়ঙ্গম করিতে ৬৭