ধীর। তিনি তখন স্বয়ং সেখানে ছিলেন। সাবধান থাকিও! (ভবানন্দ এক জন গোরা কর্ত্তৃক আহত হইয়া তাহাকে প্রত্যাহত করিলেন। তিনি কল্যাণীকে গীতা পড়াইতেছিলেন এমত সময়ে তুমি আসিলে। সাবধান! (ভবানন্দের বাম বাহুও ছিন্ন হইল।)
ভব। আমার মৃত্যুসম্বাদ তাঁহাকে দিও! বলিও আমি অবিশ্বাসী নহি।
ধীরানন্দ বাষ্পপূর্ণলোচনে, যুদ্ধ করিতে করিতে বলিলেন “তাহা তিনি জানেন। কালি রাত্রির আশীর্ব্বাদবাক্য মনে কর। আর আমাকে বলিয়া দিয়াছেন, “ভবানন্দের কাছে থাকিও। আজ সে মরিবে। মৃত্যুকালে তাহাকে বলিও আমি আশীর্ব্বাদ করিতেছি, পরলোকে তাহার বৈকুণ্ঠপ্রাপ্তি হইবে।”
ভবানন্দ বলিলেন “সন্তানের জয় হউক, ভাই! আমার মৃত্যুকালে একবার “বন্দে মাতরং” শুনাও দেখি।”
তখন ধীরানন্দের আজ্ঞাক্রমে যুদ্ধোন্মত্ত সকল সন্তান মহাতেজে “বন্দে মাতরং” গায়িল। তাহাতে তাহাদিগের বাহুতে দ্বিগুণ বলসঞ্চার হইয়া উঠিল। সেই ভয়ঙ্কর মুহূর্ত্তে অবশিষ্ট গোরাগণ নিহত হইল। রণক্ষেত্রে আর শত্রু রহিল না।
এই মুহূর্ত্তে ভবানন্দ মুখে “বন্দে মাতরং” গায়িতে গায়িতে, মনে বিষ্ণুপদ ধ্যান করিতে করিতে প্রাণত্যাগ করিলেন।
হায়! রমণী রূপলাবণ্য! ইহ সংসারে তোমাকেই ধিক্!
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ।
রণজয়ের পর, অজয়তীরে সত্যানন্দকে ঘেরিয়া বিজয়ী বীরবর্গ
১৩