গলায় খাঁকারি দিয়ে হরিবিষ্ণু সত্যার্থী সুর করে বলতে লাগলেন—
কুলং পবিত্রং জননী কৃতার্থা
বসুন্ধরা পুণ্যবতী চ তেন।
অপারসংবিৎসুখসাগরেঽস্মিন্
লীনং পরে ব্রহ্মণি যস্য চেতঃ॥
এই নবকুমার স্বাস্থ্যবান, বিদ্যাবান ধর্মপ্রাণ হয়ে বেঁচে থাকুক, পরম জ্ঞান লাভ করুক, পরব্রহ্ম রূপ অপারসংবিৎসুখসাগরে তার চিত্ত লীন হক, তাতেই তার কুল পবিত্র হবে, জননী কৃতার্থা হবেন, বসুন্ধরা পুণ্যবতী হবেন। এর চাইতে বড় আশীর্বাদ আমার জানা নেই।
পাঁচুবাবু হাত নেড়ে বললেন, এ কি রকম বেয়াড়া আশীর্বাদ করলেন সত্যার্থী মশায়! সোমনাথের ছেলের চিত্ত যদি পরব্রহ্মে লীন হয়ে যায় তবে তার আর রইল কি? ওর বাপ মা আত্মীয় স্বজন যে মহা ফেসাদে পড়বে।
হরিবিষ্ণু সত্যার্থী বললেন, বেশ তো, আপানি নিজের মনের মতন একটি আশীর্বাদ করুন না।
পাঁচুবাবু বললেন, শুনুন, আশীর্বাদ করি, এই ছেলে সুস্থ দেহে দিন দিন বাড়তে থাকুক, বেশী অসুখে ভুগে যেন বাপ-মাকে না জ্বালায়। সুন্দর সবল খোকা হয়ে বালগোপালের মতন উপদ্রব করুক, যথাকালে লেখাপড়া শিখুক, ভাল রোজগার করুক, প্রেমে পড়ে বিয়ে করুক কিংবা বিয়ে করে প্রেমে পড়ুক। সে তৈজস্বী বীরপুরুষ হক। গুণ্ডা হতে বলছি না, কিন্তু এক চড়ের বদলে তিন চড় যেন ফিরিয়ে দিতে পারে। দরকার হলে সে যেন দেশের জন্যে লড়তে পারে, উড়তে পারে, জাহাজ চালাতে পারে। সে যেন অলস বিলাসী হুজুগে না হয়, নাচ গান আর সিনেমা নিয়ে না মাতে, চোর ঘুষখোর মাতাল