পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৮
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

একেবারে বেমালুম হবে আশা করি। সুরঙ্গীর একটা ফোটো আমার কাছে আছে, আপনার সামনেই সেটা পুড়িয়ে ফেলব।

 সুরঙ্গীর বিবাহ হয়ে যাবার পরে আমার খেয়াল হল যে আমারও শীঘ্র বিবাহ হওয়া দরকার। অবসরকালে আমি ছবি আঁক, ফোটো তুলি, নানারকম বৈজ্ঞানিক গবেষণা করি। গৃহস্থালির ঝঞ্ঝাট পোহানোর জন্যে একজন গৃহিণী থাকলে আমি নিশ্চিন্ত হয়ে নিজের শখ নিয়ে অবসরযাপন করতে পারি। এখন আমার জ্ঞান হয়েছে, হঠাৎ প্রেমে পড়া বোকামি, একত্র বাস করার ফলে একটু একটু করে স্ত্রী-পুরুষের যে ভালবাসা জন্মায় তাই খাঁটী জিনিস। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার আগে তাকে তো দেখবার উপায় নেই, তথাপি মা বাপের স্নেহের অভাব হয় না। সেই রকম বিবাহের আগে পাত্রী না দেখলেও কিছুমাত্র ক্ষতি নেই। সেজন্যেই মামাবাবুর উপর সব ছেড়ে দিয়েছি।

 আমার স্বভাব চরিত্র মতামত সবই আপনাকে জানালুম। আপত্তি না থাকলে একটু খবর দেবেন। ইতি সুকান্ত।

 সুনন্দার উত্তর এল।—আপনার স্বভাব চরিত্র আর মতামতে আমার আপত্তি নেই। যেসব চিঠি লিখেছেন তা থেকে বুঝোছি আপনি অতি সত্যানিষ্ঠ অকপট সাধুপুরুষ। অতএব আমিও অকপটে আমার গলদ জানাচ্ছি। পবনকুমার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পড়ত, তার সঙ্গে আমার প্রেম হয়েছিল। কিন্তু সে ভাদুড়ী ব্রাহ্মণ, তার সেকেলে গোঁড়া বাপ-মা আমাকে পূত্রবধূ করতে মোটেই রাজী হলেন না। পবন এখন ব্যাংগালোরে আছে, খুব একটা বড় পোস্ট পেয়েছে। তাকে পুরো ভুলতে পারি নি, তবে আপনার মতন মহাপ্রাণ স্বামী পেলে একদম ভুলে যাব তাতে সন্দেহ নেই। আমি বলি কি, সুরঙ্গী আর পবনের ফোটো পুড়িয়ে কি হবে, বরং একই ফ্রেমে দুটো ছবি