পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ডম্বরু পণ্ডিত

চার্য রোহিত তাঁর শিষ্য ডম্বরুকে বললেন, বৎস, তুমি নিখিল বিদ্যায় পারদর্শী হয়েছ, স্নাতক হবার পরেও এখানে দশ বৎসর স্নাতকোত্তর গবেষণা করেছ, তোমার যৌবনও উত্তীর্ণ প্রায়। আর আমার কাছে বৃথা কালক্ষেপ করে লাভ কি? এখন তুমি এই ব্রহ্মচর্যাশ্রম থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়ে গার্হস্থ্যে প্রবেশ কর।

 ডম্বরু প্রণিপাত করে রোহিতের চরণে একটি ক্ষুদ্র সুবর্ণখণ্ড রেখে বললেন, গুরুদেব, আমি অতি দরিদ্র, এই যৎকিঞ্চিৎ দক্ষিণা গ্রহণ করে আমাকে কৃতার্থ করুন।

 শিষ্যের মস্তকে করার্পণ করে রোহিত প্রসন্নবদনে বললেন, ওহে ডম্বরু তুমি পঁচিশ বৎসর আমার যে সেবা করেছ তাই প্রচুর দক্ষিণা, অর্থে আমার প্রয়োজন নেই। আমি জানি তুমি দরিদ্র, এই সুবর্ণখণ্ড তোমার পথের সম্বল হ’ক।

 ডম্বরু বললেন, গুরুদেব, আপনার দয়ার সীমা নেই। যাত্রার পূর্বে আপনার কাছে আরও কিঞ্চিৎ বিদ্যা ভিক্ষা চাচ্ছি।

 রোহিত সহাস্যে বললেন, বৎস, নিমজ্জিত কুম্ভের ন্যায় তুমি বিদ্যায় পরিপ্লুত হয়েছ, তোমার অন্তরে আর বিন্দুমাত্র ধারণের স্থান নেই। এখন কোনও গুণবান নৃপতিকে তুষ্ট করে তাঁর সভাকবি বা সভাপণ্ডিত হও। কিন্তু নির্বোধ আত্মগর্বী লোকের সংশ্রবে থেকো না, তাদের দানও নিও না।