পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

তুরন্ত। সিংগি মশাইরা, যদি নিতান্তই না নামেন তবে দুজনেই চেয়ারের হাতল বেশ শক্ত করে ধরে টাইট হয়ে বসুন।

 নিমেষের মধ্যে প্রাণধনের দল দুই সিংহ সমেত চেয়ারটা তুলে বাইরে এনে লরিতে চাপিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাও উঠে পড়ে বলল, চালাও নিরঞ্জন সিং, সিধা আলীপুর চিড়িয়াখানা। লাউড স্পীকারটা তখনও মাটিতে পড়ে গর্জন করছে—অত কাছাকাছি বঁধু থাকা কি ভালো-ও-ও।

 জুএর সামনে এসে লরি থামল। বটেশ্বর আর দামোদরকে খালাস করে প্রাণধন করজোড়ে বলল, কিছু মনে করবেন না মশাইরা। শুনেছি আপনারা বিশ্ববিখ্যাত লোক, শুধু দু বেটা গুণ্ডার খপ পরে পড়ে খেপে গিয়েছিলেন। সবই গেরোর ফের দাদা, কি করবেন বলুন। ঘাবড়াবেন না, আপনাদের ড্রাইভারদের বলা আছে, তারা আধ ঘণ্টার মধ্যে মোটর নিয়ে এসে পড়বে। ততক্ষণ আপনারা একটু গল্প-গুজব করুন, দুটো সুখ দুঃখের কথা ক’ন। আচ্ছা, আসি তবে, নমস্কার।


সিংহসমাগমের অতর্কিত পরিণাম দেখে প্রীতিসম্মিলনের সকলেই হতভম্ব হয়ে গেলেন। কালাচাঁদ আর গৌরচাঁদ বেগতিক দেখে সদলে সরে পড়ল। অতিথিরাও অনেকে বিরক্ত হয়ে চলে গেলেন।

 কিন্তু আয়োজন একবারে পণ্ড হল বলা যায় না। অতিথিদের মধ্যে অনুকূল চৌধুরী, রাজলক্ষ্মী দেবী প্রভৃতি চোদ্দ-পনরো জন মাথাঠাণ্ডা স্থিতপ্রজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন, তাঁরা রয়ে গেলেন। সকলেই বেচারামবাবুকে আন্তরিক সমবেদনা জানালেন, বটেশ্বর-দামোদরের কেলেঙ্কারি আর কালাচাঁদ-গৌরচাঁদের গুণ্ডামির নিন্দা করলেন, বাংলা