পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কামরূপিণী
৬৫

 নুটু বলল, ও শীতুমামা, কাল যে গল্পটা বলছিলে তা তো শেষ হয় নি। খেতে অনেক দেরি হবে, ততক্ষণ গল্পটা বল না।

 শীতুমামা বললেন, আচ্ছা বলছি শোন।— তার পর রাজা তো খুব সানাই ভেঁপু রামশিঙা ঢাক ঢোল জগঝম্প বাজিয়ে শোভাযাত্রা করে সুয়োরানীকে বিয়ে করে রাজবাড়িতে নিয়ে এলেন। পঞ্চাশটা শাঁখ বেজে উঠল, রাজার মাসী পিসী মামীরা খুব জিব নেড়ে হুলুলুলু করলেন। বেচারী দুয়োরানী মনের দুঃখে তাঁর খোকাকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেলেন। এখন, সেই সুয়োরানীটা ছিল রাক্কুসী। সাত দিন যেতে না যেতে রাজার কাছে খবর এল— হাতিশালায় হাতি মরছে, ঘোড়াশালায় ঘোড়া মরছে, শুধু তাদের হাড় দাঁত আর ন্যাজ পড়ে আছে।

 নুটু বলল, সুয়োরানী ওসব চিবুতে পারে না বুঝি?

 নুটুর মা সুরুচি ধমক দিয়ে বলল, চুপ কর খোকা, ও ছাই গল্প শুনতে হবে না। শীতুমামা, আপনি এইসব বিদকুটে গল্প কেন বলেন? এতে ছোট ছেলেদের মনে একটা খারাপ ছাপ পড়ে।

 নিকুঞ্জ ঘোষ হেসে বললেন, আরে না না। সব দেশেরই রূপকথায় একটু উৎকট ব্যাপার থাকে, তাতে ছোট ছেলেমেয়ের কোনও অনিষ্ট হয় না। তারা বেশ বোঝে যে সবই বানিয়ে বলা হচ্ছে। নয় রে নুটু?

 নুটু বলল, হাঁ। আমিও গল্প বানাতে পারি।

 সুরুচি বলল, যাই হ’ক, শীতুমামা আপনি ওসব বেয়াড়া মিথ্যে গল্প বলবেন না।

 শীতুমামা বললেন, বেশ, মা-লক্ষ্মীর যখন আপত্তি আছে তখন বলব না। নুটু, তুই বরং তোর মায়ের কাছে রামায়ণের গল্প শুনিস, শূর্পণখা রাক্কুসীর কথা, খুব ভাল সত্যি গল্প। কিন্তু একটা কথা