বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
আফগানিস্থান ভ্রমণ

তিনি নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দেন। কিন্তু তাতে কোন ফল হল না। ইরান সরকার তাঁকে যতটুকু সাহায্য করেছিলেন তা ইণ্টার-নেশনেল আইন বজায় রাখবার জন্যই। ইরানে চিফ জাস্টিসের শরীর ভেংগে যায়। হিন্দুপ্রতিনিধি জিজ্ঞাসা করলেন “কি করে শরীর পুনরায় গঠন করা যায়।” সে প্রশ্নের উত্তর কি দেব আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না। এদিকে ওদের কিছু বলাও দরকার। অগত্যা শরীর ভাল রাখার উপযুক্ত খাদ্য খেতে পরামর্শ দিলাম। কিন্তু বৃদ্ধ ভদ্রলোকেরা চেয়েছিলেন কোনও মন্ত্রশক্তির সাহায্যে তাদের যৌবন কয়েক মিনিটের মাঝেই ফিরিয়ে পেতে। বাংলাদেশের লোক সকলেরই যাদুবিদ্যা অল্পবিস্তর জানে—এই ছিল তাঁদের ধারনা এবং বাংগালীর মন্ত্রশক্তির প্রভাবে মানুষকে ছাগলে এবং ছাগলকে মানুযে পরিণত করতে পারে এটাও তাদের ধারণা ছিল। বস্ত্রব্যবসায়ী পাঠানরা নাকি এসব তাজব ব্যাপার বাংলা মুলুকে স্বচক্ষে দেখে গেছে।

 আশ্চর্যের বিষয় উভয় ভদ্রলোকই শিক্ষিত, নানা দেশের রাষ্ট্রনীতির সংগে পরিচিত, অথচ তাঁরা এরূপ মনোভাব পোষণ করেন দেখে আশ্চর্যান্বিত হয়েছিলাম। তাঁদের বললাম “যে সকল কথা আপনার সত্য বলে গ্রহণ করেছেন সেই কথা সত্য নয়, মন গড়া কথা মাত্র।” উভয় ভদ্রলোকই আমার কথায় দুঃখিত হলেন এবং আমাকে প্রসন্নমনে বিদায় দিতে পারেন নি।

 সেদিনই বিকালবেল মিঃ আবদুল্লার সংগে ফের দেখা করলাম এবং বাচ্চা-ই-সাক্কোর সম্বন্ধে কয়েকটি কথা জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি আমাকে বললেন “বাচ্চা-ই-সাক্কো যখন পালিয়ে যান। তখন তাঁরই চেষ্টায় বাচ্চ-ই-সাক্কো ধরা পড়েন এবং পরে তাঁকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়।”

 কাবুল শহর রাষ্ট্রনীতি আলোচনার একটি বিশেষ আড্ডা। কাবুলের একদিকে রুশদেশ এবং অন্যদিকে ইরান হতে তুর্কি পর্যন্ত মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অধ্যুষিত দেশগুলি থাকায় রাজনৈতিক চর্চা ভাল মতেই চলে। এখানে বসে হিন্দুদের হৃৎকম্প সৃষ্টি করার মত বাক্য উচ্চারণ করার সুযোগ এবং সুবিধাও