পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৭০
আফগানিস্থান ভ্রমণ

 আফগানিস্থান স্বাধীন দেশ। সে দেশ সম্বন্ধে প্রতিকুল কিছু লিখলে তার প্রতিবাদ করার লোক আছে। সেজন্যই হয়তো আফগানিস্থানের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লিখতে সাহস করে না। কিন্তু ভারতেরই অন্ন খেয়ে ভারতবাসীরই আর্থিক সাহায্য পেয়ে অনেক বিদেশী পর্যটক অবশেষে যখন বই লিখেন তখন ভারতের বিরুদ্ধে নানা অসত্য এবং কাল্পনিক তথ্য প্রচার করতে কুণ্ঠিত হন না। এরূপ একটি লোককে আমি জানি। তার নামধাম বলে লাভ নেই, তবে এই পর্যন্ত বলতে আপত্তি নেই যে তিনি একজন পলাতক রুশ। দাস্যবৃত্তিতে তাঁর অরুচি নেই। যারা রুশদের ইতিহাস পাঠ করেছেন তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন, ডনদীর তীরের অধিবাসীরা ১৯১৭ সনেও ক্রীতদাসই ছিল। মহামতি লেনিন এদের দাসত্ব-শৃঙ্খল মুক্ত করেন। পলাতক রুশেরা দীর্ঘকাল দাস্যবৃত্তিতে অভ্যস্ত ছিল, সেজন্যই স্বাধীনতা তাদের মনঃপূত হয় নি। তারা বিদেশে পালিয়ে এসেছিল। এসব ক্রীতদাসদেরই একটি ভারতের নুন খেয়ে ভারতের বিরুদ্ধে অসত্য, অর্ধসত্য ও বিকৃত সত্য উল্লেখ করে এক বই লিখেছিলেন। তাতে দুঃখ করার কিছুই ছিল না। মনে করতে হবে এটা তার দাসত্ব-কলঙ্কিত জঘন্য মনোবৃত্তিরই পরিচায়ক, প্রকৃত পর্যটকের সত্য-দৃষ্টি তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্তে ছিল না। এই লোকটি ইণ্টার-নেশনেল পাসপোর্ট-এর সাহায্যে পৃথিবীর বেশ খানিকটা বেড়িয়েছিল। পৃথিবী পর্যটন করার সময় আমিও নানারূপ দুঃখকষ্ট ও অসৎব্যবহারে তিক্ত অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলাম। কিন্তু সেজন্য কখনও কোন জাতের বিরুদ্ধে বিকৃত তথ্য লিপিবদ্ধ করবার প্রবৃত্তি আমার হয় নি। ভাল করেই জানি কোন জাতিই চিরকাল অবনতির নিম্নতম সোপানে পড়ে থাকবে না।

 হিরাত শহর বর্তমান যুগে যেমন মধ্য-এশিয়ায় প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। অতীত যুগেও তেমনি খ্যাতি ছিল। তখন ছিল শৈবদের হিরাত, এখন হয়েছে কূটনৈতিকদের। বাস্তবিক পক্ষে এখানে আর ধর্মের স্থান নেই। মসজিদগুলিতে অতি অল্প লোকই প্রার্থনা করতে যায়—তারা যেন ধর্মকে এড়িয়ে