পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

 এরপর দ্বিতীয়বার যখন মা দেওঘরে এলেন তখন মায়ের অর্দ্ধ অঙ্গ পক্ষাঘাতে পড়ে গেছে, জ্বর বিকারে তিনি বেহুঁস ও অচেতন। সুরেন ঠিক কচি ছেলের মত কোলে সেই জ্বর বিকারের রোগীকে ট্রেন থেকে দেওঘরে নামিয়ে নিল, পোষ্ট অফিসের কাছাকাছি একটি বাড়ী ভাড়া করে মাকে রাখা হ’লো। সেবার দেওঘরে তাঁকে কয়েকমাস থাকতে হয়েছিল। জ্বর ত্যাগ হয়ে শরীরে বল এসে কবিরাজী চিকিৎসায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত দেহ কতকটা সুস্থ হলে পর মা আবার কলকেতায় ফিরে গেলেন। তার অনেক পরে রামরাজকে দেখেছি কলকেতার শেরিফের তকমা ঝুলিয়ে সুকিয়া স্ট্রীটে শেরিফ সাহেবের বাড়ীর দরজায় বসে থাকতে। আমি তখন বেকার অবস্থায় ঘর সংসার আত্মীয় স্বজন ছেড়ে কলকেতার মেসে বাস করছি আর সংবাদপত্রে ওয়াণ্টেড কলম দেখে দেখে মরিয়া হয়ে আবেদন নিবেদন ঝাড়ছি। এহেন নিঃস্ব আমাকে দেখলেই সে উঠে দাঁড়িয়ে ধনীর দুলালের প্রাপ্য সসম্ভ্রম অভিবাদন জানাত।

 মা দ্বিতীয়বার দেওঘরে থাকতে একদিন কানা ঘুষায় তা’ শুনতে পেয়ে দিদিমা আমাকে স্পষ্ট জিজ্ঞাসা করে বসলেন। আমি স্বীকার করে বললুম, যে, হাঁ, রোগ হয়ে মা চেঞ্জের জন্যে এসেছেন দেওঘরে। তখন দিদিমা বললেন “আমরাও সেদিন দেখেছি, আমাদের বাড়ীর সামনে দিয়ে খোলা ফিটনে বিবি সেজে যাচ্ছিল।” শুনে তো আমি পেটের হাসি চেপে রাখতে পারি নে। অনাথিনী মা আমার একবস্ত্রে বিধবার বেশে কত

১০৮