পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

একদিন কলেজ থেকে বিধান বোর্ডিংএ ফিরছি, একদল ছেলে আমার কাছাকাছি এসে অন্যদিকে চেয়ে বলতে বলতে চললো, “অ নবাব, নবাব, অ খাঞ্জা খাঁ।” আমি নির্ব্বিকার! পরম গম্ভীর ও নির্লিপ্ত ভাবে মা ধরিত্রীর বক্ষে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে চলেছি, আমাকে ঘাঁটায় কার বাপের সাধ্যি।

 পাটনা কলেজে পড়েছিলুম বোধ হয় ছয় মাস। তারপর গ্রীষ্মের ছুটিতে দেওঘরে দিদিমার কাছে এসে যখন আছি তখন সস্ত্রীক মেজদা ঢাকা থেকে প্রথম দেওঘরে এলেন। আগেই বলেছি দাদা বাবু (আমার মাতামহ) রাজনারায়ণ বাবু অসবর্ণ বিয়ের বিরোধী ছিলেন বলে মেজদার মুখ দেখবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তাই তিনি বেঁচে থাকতে আর মেজবৌদিকে আমার দেখা হয় নি। ভাল কথা, দাদা বাবুর অসুখ ও মৃত্যুর কথা এখনও বলা হয়নি, প্রসঙ্গক্রমে যখন কথাটা এসেই পড়লো তখন সেটাও এইখানে বলে নিই। বোধ হয় আমি ফার্ষ্ট ক্লাসে পড়বার সময় এ ঘটনাটা ঘটে।

 একদিন সকালে বেড়িয়ে ফিরে এসে দাদা বাবুর হঠাৎ এপোপ্লেক্সি হ’লো, তখনই অর্দ্ধ অঙ্গ তাঁর পক্ষাঘাতে পড়ে গেল। কত ডাক্তার বৈদ্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করানো হ’লো, সে অবশ অঙ্গ কিন্তু আর বশে এসে সচল হলো না। বিছানায় শুয়ে শুয়ে বাহ্যে প্রস্রাব করতেন, শোয়া অবস্থায়ই খাইয়েও তাঁকে দিতে হ’তো। আমার ওপর ছিল তাঁর সেবার ভার। আমার এই অক্লান্ত সেবা দেখে হেডমাষ্টার যোগীন বাবু

১২৬