পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

বারাণ্ডা। ঘর এ-পাশে দু’খানি ও-পাশে দু’খানি এবং মাঝে হলের মত লম্বা ধরণের আরও দু’খানি। একটি ঘরে মেজদা শুতেন ও তাঁর রাশি রাশি বইএর মাঝে ডুবে থাকতেন কবিতার রস মাধুর্য্যে। বাইরের হলটি ছিল ড্রয়িং রুম, ভিতরেরটি ছিল বৌদির শোবার ঘর। এ পাশের মাঠের দিকের প্রথম ঘরটি ছিল আমার আর তার ভিতর দিকেরটি ছিল খাবার ঘর— dining room; ভিতর দিকে সারি সারি খোলার ঘরে ছিল বাথ রুম, রান্নাঘর ও ভাঁড়ার ঘর। ঢাকায় এসে আমার জীবনের অন্তঃপুরে ঢুকলেন তাঁর অনবদ্য লাবণ্যে যৌবন-কান্তিতে চারিদিক আলো করে আর একটি মেয়ে। তারও নাম ধাম বলার উপায় নেই।

 ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়ে আমার ভাব হলো সুসংএর ছোট তরফের ছেলে সুরেশ চন্দ্র সিংহের সঙ্গে। শুনেছি এখন সে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট না ঐ রকম কি। তখন সে ছিল নারীর অধিক কোমল কবিপ্রকৃতির লাজুক ছেলে। আমার ও তার কবিতা লেখার বাই ছিল বলে ভাবটা হ’লো খুবই গাঢ় রকমের। সকালে বাড়ীতে কবিতা লেখা, দুপুরে কলেজ করা, বিকেলে সুরেশের সঙ্গে রমনার মাঠে বেড়াতে যাওয়া, রাত্রে গিয়ে সেই মেয়েটিকে পড়ানো—এই হলো আমার সারা দিনের কাজ। মেয়েটি ছিল তন্বী, কিশোরী, নাতিদীর্ঘ, বিপুলকুন্তলা, সত্য সত্যই হরিণনেত্রা যাকে বলে। রং ছিল তার গায়ের ঠিক দুধে আলতায়, চোখ দুটিতে কি যে অতল কালো গভীরতার ডাক

১২৯