পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

ভোরের খুব কাছাকাছি গিয়ে কোন গতিকে আত্মরক্ষা করলুম। আমিও বুঝলুম আর সেও বুঝলো এরকম করে আর বেশী দিন চলবে না, সংযমের বাঁধ আমাদের ভেঙে পড়ছে।

 তখন আমার এলো পরিণাম চিন্তা! তাইতো, এত অসহায় যে, এমন ভীরু ও দুর্ব্বল যে তার সুখের নির্ব্বিঘ্ন সংসার নীড়টুকু নষ্ট করে দেব? এক দিন না একদিন গোপন সম্বন্ধটুকু আমাদের ধরা পড়বেই পড়বে, তখন বেচারী সে লজ্জার আঘাত কি সইতে পারবে? আমি দু দিন ধরে তাকে বুঝিয়ে ঢাকা ত্যাগ করলুম, চক্ষের জলে বুক ভাসাতে ভাসাতে সে গাড়ী করে আমায় ট্রেণে তুলে দিয়ে গেল। কলকেতায় এসে তার প্রেমভিক্ষায় ভরা ২।৩ খানি চিঠি পেয়েছিলুম। তারপর তারই হাতের লেখা স্বাক্ষরহীন একখানি চিঠি এক দিন এলো, তাতে সে লিখেছে, “আমি আর এ দোটানা সইতে না পেরে ওঁকে সব বলেছি। আমায় আর চিঠি লিখো না, আমার দুর্ব্বলতার অপরাধ ক্ষমা করো। তোমার অভাগিনী—।” পরে শুনলুম সে পাগল হয়ে গেছে! দশ বারো বছর সে বেঁচে ছিল পাগল ও রুগ্ন অবস্থায়। আজ কয়েক বছর হ’লো সে সকল জ্বালার বোঝা নামিয়ে দিয়ে রূপের ও লাবণ্যের কোন অলক্ষ্য জগতে চলে গেছে—আমার প্রতি তার সে প্রেম ও স্মৃতির বোঝাও হয়তো এপারেই ফেলে দিয়ে। আরও একবার তাকে দেখেছিলুম, সে কথা পরে বলছি।


১৩৩