পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

উপায় তো ব্যবস্থাকর্ত্তা রাখে নি, আর ট্যারা একচোখ্যে নীতিবাগীশই তো এই দিন দুনিয়ার উপায় ও ব্যবস্থা কর্ত্তা নয়।

 সুসংএর ছোটতরফ আমায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গারো পাহাড়ের কাছাকাছি কোথাও কৃষির জন্য একশ বিঘে জমি দেবেন বলে। মেজদা’ বলেছিলেন, “কলকেতায় গিয়ে জোগাড় যন্ত্র কর, টাকা আমিই না হয় দেব।” কৃষির কবিতা-মাখা ছবিটি বুকে নিয়ে ট্রেণে ষ্টিমারে মাঠ ঘাট নদী নালা ডিঙিয়ে এসে পড়লুম ট্রাম ছ্যাকরার হৈ-চৈ ভরা কলকেতায়। তাকে হারাবার স্মৃতির দাহ বুকে আর এই স্বপ্ন মাথায় নিয়ে হর্ষ আর বিষাদে কেমন এক রকম অব্যবস্থিত অবস্থায় ফিরে এলুম—আবার এলুমও ঠিক সেই কৈশোরের ভালবাসার পাত্রী এতদিনে বিস্মৃতির বশে আধভোলা মেয়েটির কাছে। তার জীবনে তখন সেই মানুষ আসা যাওয়া করছে যাকে সে একদিন মালা দিয়ে বিবাহিত জীবনে বরণ করে নেবে। বোধ হয় সে আমাকে ও তাকে দু’জনের কাউকেই ভালবাসে নি, শুধু আমাদেরই ভালবাসার টানে পড়ে করুণায় গলে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারে নি। এমনই ওরা কোমল ও অসহায়, কাকে দিতে কাকে যে সর্ব্বস্ব দিয়ে ফেলে তার ঠিক ঠিকানা হদিস পর্য্যন্ত থাকে না; শেষে হয়তো সারাটা জীবনই অনুতাপ করে জ্বলে পুড়েই মরে।

 একদিন ভোর বেলা ছাদে উঠে পূর্ব্বাকাশে ঊষার অরুণ রাগের স্নিগ্ধ লাজ-রক্তিমার শোভাটুকু আনমনা হয়ে Cচয়ে

১৩৭