পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

শিমুলতলায় নামলুম, যাতে কেউ খুঁজতে এলে আমাকে না পায়। তার পর আবার ডাউন ট্রেনে করে যাত্রা করলুম বর্দ্ধমানের পথে। যদি কেউ খোঁজে কলকেতার পথেই খোঁজ করবে, এই ছিল আমার ধারণা, অথচ আমার মত বাঁধন ছেঁড়াকে খুঁজবে যে না কেউ তা’ ঠিক ভেবে উঠতে পারি নি।

 রাঙা মা আমার তখন বর্দ্ধমানে একটি বাড়ী ভাড়া করে আছেন। সঙ্গে আছে বন্ধু সুরেন। মা তো আমাকে পেয়ে আকাশের চাঁদ হাতে পেলেন, তখনই প্রতিশ্রুতি দিলেন তাঁর দপ্তরি পাড়ার বাড়ী বেচে আমায় কৃষির জন্যে টাকা দেবেন। এই বর্দ্ধমানে একমাস থাকার পর কলকেতায় মেসে এসে উঠলুম যোগাড় যন্ত্র করে মায়ের বাড়ীথানি বিক্রমপুরে দেবার উদ্দেশ্যে। এই দুঃসাধ্য সাধন করে তুলতে সুরেনের ও আমার কয়েক মাস লেগেছিল। সুরেন থাকতো কলেজ স্ট্রীট Y. M. C. Aতে আর আমি থাকতুম ওরই কাছে কর্ণওয়ালিস ষ্টীটের এক মেসে। হাতে টাকা নেই, উপার্জ্জন নেই, সহায় সম্বল কিছু নেই এই নির্ব্বান্ধব কলকেতার জনারণ্যে। নীচে য়্যাণ্ড্রু ইউল কোম্পানি সেই প্রথম এক পয়সা কাপের চায়ের দোকান খুলেছে আর তার পাশেই ব্রজেন দত্তের ষ্টুডেণ্টস্ লাইব্রেরী।

 ছেলে বেলা থেকে ধুঁইয়ে ধুঁইয়ে “মিনার” নাম দিয়ে একটা উপন্যাস লিখেছিলুম, ষ্টুডেণ্টস্ লাইব্রেরীর এই ব্রজেন বাবু সেখানা ছাপাবার ভার নিলেন। সে বই যখন বেরুল তখন আমি কোথায় তা এখন আর মনে নেই, সে ছেলেমানুষী

১৪৬