পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

একটু খানি এগিয়ে পুরাণো ভারতীয় ষ্টাইলে গড়া গৃহস্থের ছোট্ট বাড়ী দেখে বলেন, “oh! how beautiful, আহা কি সুন্দর!” কলাজ্ঞানে ক’ অক্ষর গোমাংস হ্যাটকোটধারী রাজ-অমাত্যরা তো অবাক! এত লাখ লাখ টাকার মিনার গুম্বোজওয়ালা বাড়ী হলো কদাকার আর একটুখানি কুঁড়ে হলো সুন্দর! একজন তো অরবিন্দের কাছে এসে কানে কানে বলেই ফেললেন, “I say, she is mad!” “ওহে! উনি তো পাগল!” সেজদা’ অরবিন্দ তখন বরোদা কলেজের ভাইস প্রিলিপাল কি মহারাজার প্রাইভেট সেক্রেটারী তা’ আমার স্মরণ নেই, সেটা কিন্তু ধর্ত্তব্যের মধ্যে নয়, কারণ যে পদে যেখানেই সেজদা’ থাকুন তাঁর সাহায্য ও পরামর্শ বিনা গায়কোবাড়ের একদিনও চলতো না। মহারাজার লক্ষ্মীবিলাস প্রাসাদ থেকে অল্প দূরেই কলেক্টর ‘নায়েব সুবা খাসি রাও’এর প্রকাণ্ড দোতলা লাল ইঁটের বাড়ীতে অরবিন্দ তখন থাকতেন। বরোদার ইঙ্গভারত রাজ অমাত্য সমাজে তাঁর তখন অসীম প্রভাব, বন্ধুরা সব মেজাজে ও বেশ ভূষায় সাহেব, অধিকাংশই বিলাত ও যুরোপ ফেরতা finished gentleman। তাঁদের কেতাদুরস্ত সভ্য সমাজে অকস্মাৎ অতি প্রত্যূষে উদয় হ’লো এক অদ্ভূত জীব ময়লা সার্ট ও ধুতি পরা, ছেঁড়া ক্যাম্বিসের ব্যাগ হাতে, ততোধিক ধূলো ময়লামাখা ক্যাম্বিসের জুতো পায়ে এক ভবঘুরে যুবক, চোখে তার নেশা, তাজা প্রাণে অনন্ত আশা, দুনিয়া তার কাছে অর্দ্ধেক রাজ্য ও রাজকন্যা লোভী রাজপুত্রের স্বপ্নের মত আর চেহারা ও বেশভূষা

১৬৪