পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরিশিষ্ট

 দেশে এলুম অপূর্ব্ব এক স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন নিয়ে; এইখানে “আমার আত্মকথা”র প্রসঙ্গের পরিসমাপ্তি আর “বোমার কথা”র আরম্ভ। যাঁরা এই দুই শ’ পৃষ্ঠাব্যাপী আত্মকাহিনী মন দিয়ে পড়েছেন তাঁরা এই মানুষকে তার রক্তরাঙা বিপ্লব প্রচেষ্টার মাঝে চিনতে পারবেন কিনা সন্দেহ। যে ভাবুক খেয়ালী মানুষ বাবরী চুল রাখে, অতি সযত্নে ঢেউ খেলানো টেরি কাটে, নাগরা জুতা পায়ে দেয়, দেওঘরের পাহাড়ে বসে রবিয়ালী ভাষায় ও ভাবে প্রেমের কবিতা লেখে, বাঁকিপুরে গিয়ে মনোহারী দোকান ও চায়ের ষ্টল খোলে, আবার এক কথায় সেই দোকান তুলে দিয়ে বার শ’ মাইল দূরে গুর্জ্জর দেশে পাড়ী জমায়, সে মানুষ হঠাৎ কেন এমন একটা বীভৎস গুণ্ডামীর কাজে হাত দিল? রবীন্দ্রনাথ যদি কাল শান্তিনিকেতন ও কবির মধুমাখা কলম ছেড়ে রাতারাতি বিশে ডাকাতে পরিণত হন আর গালপাট্টা রেখে মালকোচা মেরে ঠ্যাঙ্গা হাতে অন্ধকার গলির মুখে মেছো বাজারে মানুষ ঠ্যাঙ্গাতে নামেন তা’ হলে সেটা একটা বিপরীত কাণ্ড হয় না কি? শুধু আমিই নই আমার মত হাজার হাজার নির্ব্বিরোধ নারীর অধিক কোমল প্রকৃতির মানুষ রাজনীতির পাল্লায় পড়ে ঠ্যাঙাড়েয় পরিণত হয়েছে। এই অদ্ভুত কাণ্ড কেন ঘটলো তার কারণ আমি যথাসাধ্য বিশদ করে “বোমার কথা”র মুখবন্ধে বলেছি।

১৮৪