পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

 মাঝে মাঝে মেওয়াবেচা কাবলীওয়ালার আবির্ভাব হ’তো আর আমরা কিসমিস বাদাম আক্রোট খোবানী আনার পেস্তা খেতে পেতাম, এও সেই দুঃখের শৈশবকে সুখস্মৃতিতে কম উজ্জ্বল করে রাখে নি। কাবলীওয়ালারা বোধ হয় ছেলে পুলে ভালবাসে, সুদূর পাহাড়ের তুষার ঢাকা কোলে, নিজেদের ছেলেপুলে ফেলে এসে ওদের ক্ষুধিত প্রাণ শিশুর হরিণ চোখের ফাঁদে সহজেই ধরা পড়ে যায়, নইলে মায়ের কাছে মেওয়া বেচে বাইরে এসে আমাদের মুঠি মুঠি মেওয়া বিনা পয়সায় দিয়ে যাওয়ার অর্থ কি? আমার দাদার মেয়ে বুলারাণীর কাছেও শুনেছি ছেলেবেলায় অচেনা কাবলীওয়ালা রাস্তায় তার হাতে দশটাকার নোট গুঁজে দিয়ে চলে গেছে। ওদের মধ্যে কিন্তু বন্য পশুর ভাবও খুবই প্রবল। অশুদ্ধ শক্তিমান রাজস আধারে যা হয় আর কি। ও জাতি কখনও সভ্য ছিল কিনা জানি নে, প্রায় প্রাগৈতিহাসিক যুগে গ্রীস রোমেরও আগে হয়তো আর্য্য সভ্যতা ও শিক্ষাদীক্ষা ওখানে ছিল। ভারপর এতদিন অসংস্কৃত অশিক্ষিত অবস্থায় থেকে একটা কালচারে অনুশীলন (Background) হারিয়ে জাতটা বুনো মেরে গেছে। আন্দামানে আমাদের ৮০।৯০ জন রাজনীতিক বন্দীকে কঠোর শাসনে রাখবার জন্যে একমাত্র পাঠানই নিয়োগ করা হতো,— পেশোয়ারী ও কাবুলী পাঠান। কারণ ওরা নিষ্ঠুর ও ক্রূর প্রকৃতির, পয়সার লোভে না পারে এমন কুকর্ম্ম নেই। কামের দিক দিয়ে ওরা সচরাচর কামরাক্ষস বিশেষ, স্ত্রীর চেয়ে সুকুমার বালক ওরা কামচর্চ্চার জন্যে ভাল

৩২