পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

 হয়তো আমাদের ভাল সেই-ই বোঝে ভাল। ঝড় ঝাপটায় এই নিরন্তর বেড়ালছানা নাড়ানাড়িতেই হয়তো আমরা শক্ত সমর্থ হয়ে গড়ে উঠতে পারি। একটানা সুখের নীড়ের আওতায় গজানো আমাদের পলকা নধর জীবন হয়তো ষড় ঋতুর পরিবর্ত্তনে বেঁচে থাকতে পারে না। একঘেয়ে সুখের মাঝে এই নবরসঘন আনন্দের আস্বাদনও হয়তো বিস্বাদ হয়ে আসে। সৃষ্টির সুকুশলী শিল্পী কি যে চায় আমাদের জীবন ক’টি নিয়ে, সেই-ই তা’ জানে। তার হিসাব কিতাব আমাদের প্রাণের ও আকুল হৃদয়ের চাওয়া পাওয়া সাধ আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে আজও কিছুতেই মিললো দু’বছর যেতে না যেতে আমাদের গোমস্ লেনের সুখের ঘরে আগুন লাগলো। এইখানে এসেও রাঙ্গা মায়ের কোলে বসে আমার প্রথম হাতে খড়ি, এক জন প্রাইভেট টিউটরের কাছে প্রথম ইংরাজী শিক্ষা। কাঠের মত কঠিন মুখ, কল্পনাশক্তি বিরহিত, নিতান্তই কাজের মানুষ বি এ পাশ এই মাষ্টার পুঙ্গবের হাতে আমি শিখেছিলুম যত না, নির্ম্মম কানমলা খেয়েছিলুম ততোধিক। রাঙ্গা মায়ের কড়া শাসনের ভয়ে তটস্থ এই প্রথম শিক্ষাগুরুটির আড়ে আবডালে দেওয়া ধমক ও কর্ণমলায় আমার লেখাপড়ার ওপর প্রথম বিতৃষ্ণা জন্মাল, পড়ার বইগুলোকে মনে হতে লাগল দাঁতবেরকরা খেঁকী কুকুর—আমার যত দুঃখ দুর্দ্দশা ও অশান্তির ওরাই মূল। মুষড়ে পড়া নিরন্তর সন্ত্রস্ত মন নিয়ে পড়ার বই হাতে গেঙিয়ে চলা সে যে কি বিড়ম্বনা তা’ আমাদের মাষ্টার ও বাপ

৬৭