পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

সুখ শান্তির হর্ত্তা কর্ত্তা করা একই কথা। নিজের নিজের সঙ্কীর্ণ মত ও জিদের দিক দিয়ে আমরা সবাই একগুঁয়ে পাগল, হয় monomaniac নয় megalomaniac। মানুষের কোমল, জটিল ও সুকুমার মন-প্রাণ রূপ যন্ত্রটি নিয়ে যে নাড়াচাড়া করবার অধিকার পাবে তার দৃষ্টি হবে কতখানি বহুদিকদর্শী, সূক্ষ্ম ও অনুকম্পা এবং দরদে কোমল sensitive!

 আমার জীবনের কথা বলতে বলতে প্রতি কথায় এই যে লেকচার দেবার ধারা—এই অবান্তর কথার পুনঃ পুনঃ অবতারণা, এটা গল্প-রসিক অনেক পাঠক পাঠিকার হয়তো ভাল লাগছে না। কিন্তু উপায়ান্তর নেই, আমার জীবন আমার চোখে একটি অতি চিত্তাকর্ষক চাণক্য নীতির বই; জীবনের প্রতিপদে প্রতি অলি গলির বাঁকে কত শিক্ষাই যে এ আমাকে দিয়েছে তার হিসাব কিতাব নেই, সে সব এড়িয়ে এ জীবন-কথা বলতে যাওয়া বিড়ম্বনা। নিছক গল্প-রসপিপাসুরা না হয় কমা সেমিকোলনের মত ছেদ বিরামের হিসাবে এগুলো বাদ দিয়েই পড়বেন।

 এক দিন ভোর চারটে রাত্রে উঠে রাঙ্গা মা আমার কাঁদতে লাগলেন, আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, দেখো ধন, উনি বুঝি আর নেই, আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন; আমার বুকের ভেতর যেন কেমন করছে। এখনি স্বপ্ন দেখছি যেন কাছে এসে গা ঠেলছেন আর বলছেন ‘ওগো উঠে দেখো, আমি যাচ্ছি।’ উঠে—দেখি সত্যিই জলজীয়ন্ত সামনে দাঁড়িয়ে

৬৯