পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

কাঁপছিলেন, এই কথায়ই কেঁদে লুটিয়ে পড়লেন। তাঁর গভীর প্রেম প্রেমাস্পদের চিরবিরহের সংবাদ আগেই পেয়েছিল, আর বাবার এতবড় ভালবাসার এই জীবন সঙ্গিনীকে আমার ব্রাহ্ম আত্মীয়রা ঠাউরেছিলেন বাজারের বেশ্যা। মানুষের পেঁচার মত দিককাণা বুদ্ধি আর ধর্ম্মজ্ঞান কতদূর হীন হতে পারে তার দৃষ্টান্ত বাবার মৃত্যুতে আমি সাধারণ সমাজের লোকের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের মধ্যে পেয়েছি। তা যথাস্থানে যৎকিঞ্চিৎ বল্‌বো।

 সাহেবরা কোন গতিকে নির্ম্মম কাজটা সেরে চলে গেলেন, নির্ব্বান্ধব এই জনবহুল নগরের মাঝে অসহায় মা আমার আমাদের বুকে নিয়ে কাঁদতে লাগলেন। যত বড়ই শোক হোক মানুষ সন্তানের স্নেহে তা সামলে নেয়, নিরাভরণ শুভ্র বৈধব্য বেশে শোকশয্যা থেকে উঠে মা বাবার বন্ধু ব্যারিষ্টার মনোমোহন ঘোষের সঙ্গে নিজে গিয়ে দেখা করলেন। এতদিন পর সংবাদ পেয়ে কাকা এলেন, দেওঘরবাসী আমার মাতামহের প্রতিনিধি হয়ে ন-মেশো শ্রীযুক্ত কৃষ্ণকুমার মিত্র মশাই এলেন, বাগবাজারের পিসীরা এলেন, আত্মীয় স্বজনরা সব একে একে দেখা দিতে লাগলেন। বাবার জীবিতকালে কাকাদের, দেওঘরবাসী মাতামহদের ও ন-মেশোমশাইদের কারু সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক ছিল না। ছিল কেবল বাবার দিকের দু’চারটি মানুষের সঙ্গে। আমার বড় পিসী বিধবা বিরাজমোহিনী আসতেন আমাদের গোমস লেনের বাড়ীতে, আমার পিসতুত বোন গোলাপ দিদি

৭১