পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পদস্খলন হবে না। ও হরি হরি! একটু পরদা তুলে তার জীবনের অন্তঃপুরে তাকে দেখে অবাক্! তার নিজের বা মেয়ের কেলেঙ্কারী চাপা দেবার জন্যে সেই সাধু পুরুষের কি আকুলি ব্যাকুলি, কি ছেলেমানুষের মত ব্যবহার! এরকমটা কেন হয়? আমার লেখায় নানা জায়গায় মনুষ্য-চরিত বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এর হেতু আমি বিশদ করে অনেকবারই বলেছি। মানুষের মন ঊর্দ্ধ-লোকের জীব— সে হচ্ছে আধ আঁধার আধ আলোকের রাজ্যের বাসিন্দা—এক কথায় সাজা ভদ্রলোক বা জেণ্টলম্যান; কিন্তু মানুষের প্রাণ হচ্ছে কাদার জন্তু, পাঁকে তার বাস এবং পাঁক তার আহার্য্য! এই মন আর প্রাণ দুইয়ে মিলে জুলে ঘরকন্না, তাই মনের আকাশ-কুসুম মনেই ফুটে চিন্তায়ই মিলিয়ে যায়; জীবনে রূপ নিতে পারে না; সেখানে পাঁকের কুমীর প্রাণই হচ্ছে রাজা, কদাকার তার লেজের ঘায়ে ঘায়ে কাদা ঘুলিয়ে অহরহ সে শিকার ধরছেই সেখানে, নির্ম্মল জীবন-জল নিত্যই রক্তে রাঙিয়ে উঠছে।

 বাবা মারা যাবার পর যখন কৌঁসুলী মনোমোহন ঘোষের বাড়ীতে উইল পড়া হয়ে রাঙা মা হলেন বিষয়-আশয়ের সর্ব্বময়ী কর্ত্রী, তখন এই ব্যাপারটাকে রদ করবার জন্যে আমার ব্রাহ্ম আত্মীয়দের মধ্যে পড়ে গেল একটা আপ্রাণ চেষ্টা। যেমন নগ্ন তেমনি বীভৎস! কি করে এই অপাঙক্তেয় স্ত্রীলোকটিকে ধোপদন্ত সামাজিক আত্মীয় মহলে চালানো যায়! ছেলে মেয়ে ওর হাতে থাকলে যে উচ্ছন্নে যাবে! এই সব দুশ্চিন্তায় পরম

৭৬