পাতা:আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার কথা!
৯১

সংগ্রহ করিতে হইবে। আমার এটী স্বভাবসিদ্ধ ছিল। অভিনয় ব্যতীত আমি সদাসর্ব্বক্ষণ এক এক রকম ভাবে মগ্ন থাকিতাম।

 “মৃণালিনী”তে “মনোরমা”র চরিত্র সামঞ্জস্য রক্ষা করিয়া চলা যে কতদূর কঠিন, তাহা যাঁহারা না মৃণালিনীর অভিনয় দর্শন করিয়াছেন, তাঁহারা বুঝিবেন না! একসঙ্গে বালিকা, প্রেমময়ী যুবতী পরামর্শদাত্রী মন্ত্রী, অবশেষে পরম পবিত্র চিত্র স্বামী সহমরণ অভিলাষিণী দৃঢ়চেতা সতী রমণী! যে কেহ “মনোরমার” অংশ অভিনয় করিবে, তাহাকেই একসঙ্গে এতগুলি ভাব দর্শককে প্রদর্শন করিতে হইবে! গাম্ভীর্য্যের সহিত “পশুপতির” সঙ্গে কথা কহিতে কহিতে হঠাৎ বালিকামূর্ত্তি ধরিয়া “পুকুরে হাঁস দেখিগে”, বলিয়া চলিয়া যাওয়া যে কত অভ্যাস ও চিন্তাসাধ্য তাহা ধারণা করাই কঠিন। গাম্ভীর্য্য ভাব পরিত্যাগ করিয়া তৎক্ষণাৎ অবিকল বালিকাভাব ধারণ যদি স্বাভাবিক না হয় তাহা হইলে দর্শকের নিকট অতি হাস্যজনক হইয়া উঠে; “ন্যাকাম” বলিয়া অভিনেত্রী উপহসাস্পদ হন! সেইকারণে ৺বঙ্কিমবাবু মহাশয় নিজে বলিয়াছিলেন যে “আমি মনোরমার চিত্র পুস্তকেই লিখিয়াছিলাম কখন সে প্রত্যক্ষ দেখিব এমন আশা করি নাই; আজ বিনোদের অভিনয় দেখিয়া সে ভ্রম ঘুচিল!”

 আমার অভিনয় সম্বন্ধে কাগজে কলমে যে বিস্তর