পাতা:আমার জীবন.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-88 আমার জীবন আমি এককালে নিরুপায় হইয়৷ একান্ত মনে কেবল দিবারাত্র পরমেশ্বরকে ডাকিয়া বলিতাম, হে পরমেশ্বর। আমি এই পুস্তক যাহাতে পড়িতে পারি, আমাকে এরূপ কিঞ্চিৎ লিখিতে শিখাও, তুমি যদি না শিখাও, তবে আর কে শিখাইবে ! আমি এই প্রকার পরমেশ্বরের নিকটে দিবারাত্র প্রার্থনা করিতাম । আর একবার মনে ভাবিতাম, লেখাপড় আমার শিখ হইবে না । যদিও চেষ্টা করিলে এবং কেহ শিখাইলে এক আধটি বিষয় শিখা যায়, তাহারও সময় পাওয়া যায় না । আমার কিছু হবে না, মিথ্য বাসন। মাত্র । আবার মনে মনে বলি, কেন হবে না, পরমেশ্বর যখন আমার মনে এতখানি আশা দিয়াছেন, তখন তিনি কখনই নিরাশা করিবেন না ! আমি এই প্রকার সাহস করিয়া ঐ পাতটি রাখিলাম। কিন্তু দেখিতে সমর পাই না । যখন পাক করি, ঐ সময়ে সেই পুস্তকের পাতটি বঁ হাতের মধ্যে রাখি, আর এক একবার ঘোমটার মধ্যে লইয়া দেখি । দেখিলেই বা কি হইতে পারে, আমি মোটে কোন অক্ষর চিনিতে পারি না । তখন আমার বড় ছেলেটি তালপাতে লিখিত । আমি তাহার একটি তালের পাতাও লুকাইয়। রাখিলাম। ঐ ভাল পাতাটি একবার দেখি, আবার ঐ পুস্তকের পাতটিও দেখি, আর আমার মনের অক্ষরের সঙ্গে যোগ করিয়া দেখি, আবার সকল লোকের কথার সঙ্গে যোগ করিয়া মিলাইয়। মিলাইয়৷ দেখি । এই প্রকার করিয়াই কতক দিবস গত হইল, সেই পুস্তকের পাতটি একবার বাহির করিয়া দেখিতাম, আবার কেহ দেখিবে বলিয়া অমনি খোড়ীর নীচে লুকাইয়া রাখিতাম । আহা কি আক্ষেপের বিষয় । মেয়েছেলে বলিয়া কি এতই দুর্দশ ! চোরের মত যেন বন্দী হইয়াই থাকি, তাই বলিয়া কি বিদ্যা শিক্ষাতেও দোষ ? সে যাহা হউক, এখনকার মেয়েছেলেগুলা যে নিষ্কণ্টকে স্বাধীনতায় আছে, তাহা দেখিয়াও মন সন্তুষ্ট হয়। এখন যাহার একটি মেয়েছেলে আছে, সে কত ৰত্ন করিয়া লেখাপড় শিখায় ।