আমার দেখা রাশিয়া
অতিক্রম করে আমরা যন্ত্রযুগে এসেছি অনেক অবুদ্ধির খেসারত দিয়ে। আজ আমার বাড়ী দেখছো, এখানে ছিল আমার বাপদাদার মাটির কুঁড়ে, সেই অন্ধকূপে ভেড়া-ছাগলের সঙ্গে শুয়ে আমার শৈশব কেটেছে। এখন ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়ে, ক্লাবে গান গায়, রঙ্গীন পোষাক পরে নাচে, আমার নাতনী তিবলিসিতে কৃষি বিজ্ঞান কলেজে পড়ছে। প্রাচীন কালের দুঃখ দারিদ্র্য ও আধুনিক স্বাচ্ছল্যের কথা বলতে বলতে তিনি মুখর হয়ে উঠলেন।
আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, এখন কি আপনাদের মধ্যে কলহ হয় না? কেউ যদি কাজ ফাঁকী দেয় তার কি ব্যবস্থা?
বৃদ্ধ বললেন, মতভেদ ঘটে বৈকি। কাজ নিয়ে নয়, কাজের পদ্ধতি নিয়ে। ওগুলো নিজেদের মধ্যে মীমাংসা করে নেয়া হয়, না মিটলে ডিরেক্টর মধ্যস্থ হয়ে যে মীমাংসা করেন তাই আমরা মেনে নেই। ফাঁকী দেওয়ার কথা ওঠে না, কেননা আমাদের কাজ একঘেঁয়ে নয়। যে অপারগ তার খাটুনী কমিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
পাইন গাছ ঘেরা সবুজ ঘাসে ঢাকা উন্মুক্ত মাঠে বিরাট বিদায় ভোজ। চক্রাকারে আমাদের নিয়ে দেড়শ’ নরনারী বসলেন, পাঁচশ’ লোক খেতে পারে এমন মাছ মাংস রুটি পনীর ও বিবিধ পিষ্টক। সুমিষ্ট সুরার ছড়াছড়ি। গরুর শিংএর বৃহৎ শিঙ্গায় মদ্যপান। ভোজন সভার কর্তা ‘তামাদা’ তিন বোতল মদ শিঙ্গায় ঢেলে এক চুমুকে পানপাত্র নিঃশেষ করলেন। আমি তো দেখে শিবনেত্র। অতিথিদের জন্যও ঐ ব্যবস্থা। অপারগতা জানিয়ে নিষ্কৃতি পেলাম।
১৩৫