আমার দেখা রাশিয়া
সঙ্গে পরিচয়ও নিবিড় হয়ে ওঠে। এর জন্য সরকার থেকে এবং বিভিন্ন শ্রমিক-সঙ্ঘ থেকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়। কৃষ্ণসাগরের তীরে সুকুমীতে দেখেছি, বেলো-রুশ, উক্রেনের ছেলে-মেয়েরা এসেছে, মহানন্দে সমুদ্র-স্নান করছে। আবার লেনিনগ্রাদের “পাইওনীয়র্স প্যালেস” বা কিশোর প্রাসাদে দেখেছি, দূর-দূরান্তর থেকে ছেলে-মেয়েরা এসেছে। এটি জারের আমলের প্রকাণ্ড প্রাসাদ ছিল। ২০০ কারুকার্যময় কক্ষ। এখন ৯ থেকে ১৪ বছরের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা ও আনন্দ-নিকেতনে পরিণত হয়েছে। আমরা যখন গেলাম, তখন দেখি বাজনার তালে তালে বাগানে প্রায় দু’শো ছেলে-মেয়ে গান গেয়ে নাচছে। বাগানের গাছতলায় ছেলে-মেয়েরা জটলা করে নানা রকম খেলায় মেতেছে। এই প্রাসাদে সিনেমা, থিয়েটার, পুতুলের থিয়েটার, লাইব্রেরী, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, প্রাণীবিদ্যার বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। জারের আমলে যে সব সুরম্য কক্ষে কার্পেটের ওপর অভিজাত সুন্দরীরা নৃত্যে-লাস্যে বিভোল হতেন, সেখানে কৃষক-শ্রমিকের ছেলে-মেয়েরা নানা রকম শিক্ষা লাভ করছে। জ্যোতির্বিজ্ঞান শিক্ষা-কক্ষটি দেখে চমৎকৃত হলাম। আলো নিবে যাওয়া মাত্র দেখি, উপরে আকাশে সূর্য চন্দ্র পৃথিবী গ্রহগুলি অগণিত তারকামণ্ডলীর মধ্যে আবর্তিত হচ্ছে। গ্রহ-নক্ষত্রের গতি, দূরত্ব প্রভৃতি এই ভাবে শিক্ষা দেওয়া হয়। এটাকে ছোটদের একটা বিশ্ববিদ্যালয় বললে অত্যুক্তি হয় না। এমনি সব শিক্ষায়তন এরা দেশের সর্বত্র গড়ে তুলেছে। ভাবীকালের সুস্থ-সবল মানুষ গড়বার জন্য।
২৯