আমার দেখা রাশিয়া
জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমাদের দেশেও তো শুনি বিস্তর বিধবা আছে, তারা কি করে জীবন কাটায়?’
‘কি আর করবে। আত্মীয়-গৃহে দাসীবৃত্তি করে, নয়তো তীর্থস্থানে ভিক্ষে করে খায়, সমাজে তাদের স্থান—’ আর বলতে পারলাম না, কথা আটকে গেল।
‘কেন তোমরা তো তাদের শিক্ষয়িত্রী, নার্স করতে পার যেমন আমাদের দেশে শিশুপালনাগার, কিণ্ডারগার্টেন আছে, তোমাদের তা কি নেই! মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা?’
‘না নেই, ও সব হতে অনেক দেরী আছে।’
মেয়েটি উন্মনা হয়ে বলে, ‘আমরা যদি তাদের পেতাম, শিখিয়ে দিতাম, স্বাধীন দেশের মানুষ কি করে তৈরী করতে হয়।’ কথার মোড় ঘুরিয়ে ও জিজ্ঞাসা করলো, ‘আচ্ছা, তোমাদের দেশের মেয়েরা শান্তি আন্দোলন করে? আর একটা বিশ্বযুদ্ধ না বাধে, আমরা সে জন্যে যুদ্ধবিরোধী মনোভাব গঠন করছি।’
‘আমাদের দেশে শিক্ষিতা মেয়েরা যুদ্ধবিরোধী। আমরাও যুদ্ধ চাইনে। কেন না, তৃতীয় মহাযুদ্ধ বাধলে নিরন্ন রোগতপ্ত দরিদ্র ভারতে মৃত্যুর মহামারী লেগে যাবে। আমরা শান্তিরক্ষার জন্য তোমাদের সাথেই চলেছি।’
মেয়েটি আগ্রহে আমার হাত চেপে ধরে বললে, ‘দেশে গিয়ে তোমাদের মেয়েদের বলো, যুদ্ধ বড় ভয়াবহ। আমাদের দেশে আমার মত কত হতভাগিনী স্বামী-পুত্র হারিয়েছে, কত সুখের ঘর ভেঙ্গে গেছে। যে বুলেট আমার স্বামীর বুকে বিঁধেছিল,
৩৯