পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পেশায় অধ্যাপক-এই বিশিষ্ট ব্যক্তিটি যুক্তিকে গলার জোরে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করবেন না ভরসায় বিনয়ের সঙ্গে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনি কি ভূত-পেত্নী-শাকচুন্নি-ব্রহ্মদত্তিতে বিশ্বাস করেন?”

 প্রাজ্ঞ দার্শনিক আমার প্রশ্নটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা না করে আঙুলের টোকায় কাঁধ থেকে পোকা ঝাড়ার মতই ঝেড়ে ফেললেন, “ওসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করব, ভাবলেন কী করে?”

 আমি আবার বৈষ্ণব বিনয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনি কি বিশ্বাস করেন-ঘোড়ার ডিম, ট্যাশ গরু, হাঁসজারু, হাতিমি, বকচ্ছপ, রামগরুড়ের ছানা, পক্ষীরাজ ঘোড়া, এসবের বাস্তব অস্তিত্ব আছে?”

 আমার প্রশ্ন শুনে রাজনীতি করা পণ্ডিত ব্যক্তিটির মুখ মেঘলা হলো। জানি না, সেটা প্রশ্নের গতি-প্রকৃতি দেখে পরবর্তী চাল অনুমান করে শঙ্কা থেকে কি না।

 নীরবতা ভঙ্গ করতে হলো আমাকেই, “আপনাকে মানতেই হবে ভূত থেকে পক্ষীরাজ ঘোড়া ইত্যাদির অস্তিত্ব নেই এ'কথা বিজ্ঞান প্রমাণ করতে পারেনি, এমন কি, কেউই প্রমাণ করতে পারেনি। ভবিষ্যতে এসবের অস্তিত্ব প্রমাণিত হতেও তো পারে। অতএব কোন যুক্তিতে আপনি এসবের অস্তিত্বকে অস্বীকার করছেন? আপনি যে যুক্তির সাহায্যে ঈশ্বরের অস্তিত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন, সে ধরনের যুক্তির সাহায্যে যে কোনও কিছুর অস্তিত্বই প্রমাণ করা সম্ভব, তাই নয় কি?”

 প্রাজ্ঞ দার্শনিক উত্তর দেননি।


কারণ: চার

প্রমাণ করতে পারেন, ঈশ্বর নেই?


প্রায়শই দুটি আপাত চোখা প্রশ্নর মুখোমুখি হতে হয়, “আপনি কি প্রমাণ করতে পারবেন ঈশ্বর নেই? জ্যোতিষশাস্ত্র ভাঁওতা?”

 হ্যা, ঠিক এই দুটি প্রশ্নেরই মুখোমুখি হয়েছিলাম ২৩ জানুয়ারি '৯০ নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর টাউন হলের মাঠে। 'জ্যোতিষ বনাম বিজ্ঞান' শিরোনামের এক বিতর্ক সভায় কিছু জ্যোতিষী ও তন্ত্রসিদ্ধ জোতিঘীদের সঙ্গে আমিও বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছি। আর সেখানেই এক যোগীতান্ত্রিক-জ্যোতিষী আমাকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরক প্রশ্ন দুটি ছুঁড়ে দিলেন। প্রশ্ন দুটি শ্রোতাদের যে যথেষ্টই নাড়া দিয়েছিল, সেটুকু বুঝতে কোনও অসুবিধে হয়নি।

 অতি বিনীতভাবে হাত জোড় করে বললাম, “আপনি যদি মনে করে থাকেন আমি খুব জানি, বুঝি, প্রমাণ-ট্রমাণ করতে বেজায় পটু, তাহলে কিন্তু