পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কারণ: নয়

ঈশ্বর যদি প্রত্যেকের মনের কথা সরাসরি জানতেই পারেন, তাহলে কেন অষ্টপ্রহর ঢাক-ঢোল সহযোগে ‘দাও-দাও’ সংকীর্তন?


ঈশ্বর বিশ্বাসীদের বৃহত্তর অংশই মনে করেন—ঈশ্বর অন্তর্যামী। তিনি প্রতিটি মানুষের মনের কথাই জানেন। অতএব প্রতিটি ভক্তের মনের হদিশ যে তাঁর অজানা নয়—এটা স্পষ্ট। কিন্তু যেটা অস্পষ্ট ধোঁয়াশা, তা হল, তারপরও কেন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা। এমন কি মসজিদে মাইক লাগিয়ে, পুজো প্যাণ্ডেলে মাইক লাগিয়ে প্রার্থনা! এ'সবই কি অপ্রয়োজনীয় ও মূলাহীন নয়?

 যদি সোচ্চার প্রার্থনার প্রয়োজনকে মেনে নিতে হয়, তবে বলতেই হয়—ঈশ্বর অন্তর্যামী নন।

O

যদি সোচ্চার প্রার্থনার প্রয়োজনকে মেনে নিতে হয়, তবে বলতেই হয় ঈশ্বর অন্তর্যামী নন।

O


কারণ: দশ

শুনলাম, ঈশ্বর-বিশ্বাস কাল্পনিক হলেও, মিথ্যে হলেও, বিশ্বাসটা নাকি ভাল?

এক ধরনের বুদ্ধিজীবী ও বিজ্ঞানীদের আজকাল প্রায়ই দেখা পাওয়া যায়, যাঁরা মনে করেন ঈশ্বরের বাস্তব অস্তিত্ব নাও থাকতে পারে। হতে পারে, গোটা ব্যাপারটাই কাল্পনিক। তবু এই ঈশ্বর বিশ্বাসের একটা ভাল দিকও আছে। ঈশ্বর বিশ্বাস মানুষের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে টনিকের কাজ করে। এই সমস্ত বুদ্ধিজীবী ও বিজ্ঞানীদের এমনতর উদারনীতি বিষয়ে আমার যা বলার তা বলতে বরং শোনাই নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী স্টিফেন ভাইনবার্গ-এর সম্প্রতি করা দারুণ মজার মন্তব্য। স্টিফেন-এর কথায়—আমার মনে হয় ধর্মীয় উদারনীতিবাদীদের চেয়ে মৌলবাদীরা বরং বিজ্ঞানীদের বেশি কাছের লোক। হাজার হোক, বিজ্ঞানীদের মতই মৌলবাদীরা অন্তত এইটুকু বিশ্বাস করেন যে, তাঁদের বিশ্বাসটা সত্যি। কিন্তু ধর্মীয় উদারনীতিবাদীরা বলেন যে, তাঁদের বিশ্বাসটা মিথ্যে হতে পারে, কিন্তু তাঁদের বিশ্বাসটা ভাল।

 এমন কুযুক্তির হাত ধরে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের অপর নাম ‘সুবিধাবাদ' বা ঐ জাতীয় অন্য কিছু হতে পারে, কিন্তু কোনও ভাবেই ঈশ্বরের প্রতি অন্তরের গভীর বিশ্বাস হতে পারে না।

 এ জাতীয় মন্তব্য যাঁরা করেন, তাঁরা নিজেরা ঈশ্বর বিশ্বাস না করলেও

৩২