পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আপনজনদের কাছ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নেয়। অবশেষে এক সময় এরা নিজেদের সত্তা থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নেয়।

 পরবর্তীকালে দেখা যায়, রোগী মস্তিষ্কর কোষ ঠিক ভাবে উদ্দীপনা সঞ্চালন করতে পারছে না, বা ছড়িয়ে দিতে পারছে না। ফলে একটি কোষের সঙ্গে আর একটি কোষের সংবাদ আদান-প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। মস্তিষ্ক কোষের এই বিশৃঙ্খল অবস্থার দরুন রোগীর ব্যবহারে বাস্তববিমুখতা দেখতে পাওয়া যায়। রোগীর এই অবস্থায় অলীক বিশ্বাসের শিকার হয়। পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের এক বা একাধিক ইন্দ্রিয় এই অলীক বিশ্বাসের দ্বারা পরিচালিত হয়। এর ফলে ভূত বা ভগবান রোগীর লীলাসঙ্গী হতেই পারে।

 রিলিজিয়াস মিসটিক (Religious Mystic) নামে মনোবিজ্ঞানে এক শ্রেণীর মানুষের কথা বলা হয়েছে যারা নিজেদের অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী, ঈশ্বরের পুত্র, ঈশ্বরের প্রতিনিধি, ঈশ্বরের শেষ প্রতিনিধি ইত্যাদি বলে গভীরভাবে বিশ্বাস করে। এই “রিলিজিয়াস মিসটিক' শ্রেণীর মানুষরা ঈশ্বরে নিবেদিতপ্রাণ। এরা বিশ্বাস করে সমাধিস্থ অবস্থায় ঈশ্বরের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব। আর তেমনটা করলে যে কোনও অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা হাতের মুঠোয় ধরা পড়ে।

O

রিলিজিয়াস মিসটিক (Religious Mystic) নামে মনোবিজ্ঞানে এক শ্রেণীর মানুষের কথা বলা হয়েছে যারা নিজেদের অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী, ঈশ্বরের পুত্র, ঈশ্বরের প্রতিনিধি, ঈশ্বরের শেষ প্রতিনিধি ইত্যাদি বলে গভীরভাবে বিশ্বাস করে।

O

 এরা নিজেদের বিশ্বাস মতো ধ্যান করে, উপাসনা করে, সমাধিতে বসে এবং বেশি বেশি করে নিজের চিন্তার মধ্যে নিজেকে আটকে রাখতে থাকে। কর্মজগৎ ও আপনজনদের কাছ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নেয়। নিজের কল্পনার জগৎকেই বাস্তব জগৎ হিসেবে এক সময় বিশ্বাস করতে থাকে। এই গভীর বিশ্বাস থেকে এরা দিব্য আলো দর্শন করে; পরমপিতা বা ঈশ্বরের আদেশ শোনে—যেমনটি শুনেছিলেন মোজেস। এদের কেউ বা মনে করে—যা কিছু করছে, তার সব কিছু করাচ্ছে এক অলৌকিক শক্তি। এরা কখনও বা কোনও একটা মুহুর্তে কিছুক্ষণের জন্য পাওয়া অদ্ভুত এক অনুভূতিকে বাকি জীবন দঢ় প্রত্যয়ে বিশ্বাস করে বেড়ায়। এমনই মুহূর্তের কোনও অলীক অনুভূতি থেকে মনে করে-বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের রহস্যের সত্য জানতে পেরেছে। আবার কেউ বা মনে করে—যে পরমব্রহ্মকে জেনেছে। ব্রহ্মাণ্ডের রহস্যময়তাকে জেনেছে, যা বলে বোঝানো যায় না; এ এক অদ্ভুত অনুভূতির ব্যাপার; এই রহস্যের কথা কাউকে জানানো যাবে না ইত্যাদি।

৭১