পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ভারতের মানবতাবাদী সমিতির নির্বাহী সম্পাদক সৈকত মজুমদার বউবাজারে যুক্তিবাদী সমিতির অফিসের লাগোয়া চায়ের দোকানে চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিতে দিতে একটা কথা বলেছিলেন বছর খানেক আগে, “বাবরি মসজিদ ভাঙায় একটা কথা সাফ জাহির হল, রাম বল আর আল্লা বল, দু'জনের ক্ষমতাই স্রেফ ফাঁকা আওয়াজ। রাম জন্মভূমিতে বাবরি মসজিদই যদি হল, তবে সে মসজিদ রাম কেন ভাঙতে পারলেন না! কেন ভাঙার জন্য প্রয়োজন হল উন্মত্ত রামভক্তদের!

 মসজিদ ভাঙার পরও ভগবান রাম কেন নিজের জন্মভূমিতে নিজের সামান্য মন্দিরটুকু পর্যন্ত গড়ে তুলতে পারছেন না? কেন ভগবান রামের শক্তি ভারত সরকারের কাছে, আইনের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে বসে আছে?

 বাবরি মসজিদ ভাঙল কিছু মানুষ। সর্বশক্তিমান আল্লাহ কি পারলেন, সামান্য কিছু মানুষের পেশীশক্তিকে পরাজিত করে বাবরি মসজিদ রক্ষা করতে? কেনই বা আল্লাহ নতুন করে নিজের মসজিদ গড়ে তুলতে পারছেন না? কেন আল্লাহের শক্তি ভারত সরকারের কাছে, আইনের কাছে নতজানু?

 যাঁরা ইহ-জগতে নিজেদের অধিকারটুকু, নিজেদের ইজ্জৎটুকু রক্ষা করার ক্ষমতা রাখেন না, তাঁরা ইহ-জগতে এবং পর-জগতে দুনিয়ার সমস্ত-কালের মানুষদের রক্ষা ও বিচার করবেন—এমন আজগুবি কথাতে বিশ্বাস রাখবে কারা বলুন তো?”

 সৈকতের প্রশ্নের পিঠে মানবতাবাদী সমিতিরই অন্যতম সম্পাদক সুদীপ মৈত্র উত্তর দিয়েছিলেন, “কেন, মা শীতলার বাহনরা!"


কারণ: ছত্রিশ

স্বর্গ ভোগ ও নরক ভোগ কি আধ্যাত্মিক, না শারীরিক?

আজ পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মের বড়-মেজ-ছোট (জনপ্রিয়তার নিরিখে) বহু ধর্মগুরুদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। আর সুযোগ পেলেই তাঁদের টেনে নিয়ে গেছি 'পরলোক' নিয়ে আলোচনায়।

 সব ধর্মেই যেহেতু 'আত্মা' আছে এবং আত্মারা অমর, তারই সূত্র ধরে এসেছে মৃত্যুর পর 'পরলোক', এবং পরলোকের বিচারক 'পরমাত্মা', 'ঈশ্বর', 'আল্লাহ'...যে নামেই ডাকুন।

 বারবারই তাঁদের প্রতি আমার জিজ্ঞাসা উঠে এসেছে—স্বর্গ বা নরকে অথবা বেহেস্ত বা দোজখে মৃত্যুর পর আত্মারা যে সুখ বা দুঃখ ভোগ করে, সেইসব সুখ বা দুঃখ কি শারীরিক না অধ্যাত্মিক? হলফ করে বলছি, তাঁদের প্রত্যেকেরই প্রাথমিকভাবে উত্তর ছিল-অধ্যাত্মিক। আপনারা যে কেউ পরীক্ষা করে দেখতে

৯৮