পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটা চাপের সৃষ্টি করেছে। রজনী-ভুবনবাবুরা ওখানে দরবার করেছিল। রজনীবাবু তাকে দেখেও হয়তো এড়িয়ে গেছে। বেশ বুঝেছেন বসন্তবাবু ওখান থেকে কোন রকম সাহায্য তিনি পাবেন না। ফেরার সময় সেই মিছিলের ছেলেদের কথা মনে পড়ে। তাদের নির্মম ব্যবহারটা ভোলেন নি। ওদের মুখগুলোর সঙ্গে অশোকের মুখের গভীর মিল আছে। উদ্ধত সেই ছেলেটি তাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গেছল অত লোকের সামনে দিয়ে, কেউ প্রতিরোধ করে নি। বাধাও দেয় নি। নিষ্ঠুর আনন্দে তারা যেন ঝাপিয়ে পড়েছিল অসহায় একটি বৃদ্ধের উপর, যে একদিন নিজের প্রাণ তুচ্ছ করে সর্বস্ব ত্যাগ করে উত্তরপুরুষদের জন্য স্বাধীনতা কায়েম করতে চেয়েছিল। বসন্তবাবু চুপ করে কি ভাবছেন। ওই চরম অপমানিত হবার পর পািটলকে দেখেছিলেন। আজ সে প্রভূত টাকা রোজকার করেছে। ওই ছেলেগুলোর মত তাকে সে অপমান করে নি। এবং আগেকার পরিচয় নিয়ে সন্তানের সঙ্গে কথা বলেছে। তার বাড়ি নিয়ে গেছে। পটলের ওই বিরাট সম্পদ, চালু ব্যবসা কারখানা কোথেকে এল তা জানেন না। তিনি। তবু আজ সেই পটলের কাছেই তাকে মাথা নীচু করতে হবে সংসারের ॐकाJ ! বাইরে বারান্দায় ওরা খেতে বসেছে। বসন্তবাবু ওদের কথাগুলো শুনতে পান। অমৃতের একটা চাকরীও জোটে নি, সাবিত্রীর বিয়ে দিতেও পারেন নি। নিজেদের একটু আশ্রয়ের আশ্বাসও নেই। ওই সত্য আদর্শ আর সম্মানের মিথ্যা মোহে সব হারিয়ে আজ পথে এসে দাঁড়িয়েছেন। এ তারই অক্ষমতা আর দুর্বলতা। সেই দুর্বলতাকেই তিনি আজ প্রত্যক্ষ করেছেন নির্মম সত্যরূপে। অশোকের গলা শোনা যায়। -ওল্ডম্যানের নাকি চাকরী হয়ে গেছে শুনলাম ? কোনো এক শাসলো ছাত্র অফার দিয়েছে। বাসস্তবাবু চুপ কমে কথাটা শুনছেন। ওই ছেলেটিকে তিনি দেখতে পারেন না। সংসারের কোনো কিছুতেই নেই। অশোক। অমৃত-সাবিত্রী তবু নিজেদের চেষ্টায় যাহােক কিছু সংসারে আনে, আর অশোক আিম শুধু একা--- ৫ W