—না। আপনিই যান। ও যেন কি বুঝেছে। তবু সহজভাবে বলে পটল। —-বাঙ্গলাদেশের ছেলে কিনা, তাই ইলিশ মাছের লোভটা সামালাতে পারি না। বাসস্তবাবু মাছও আনেন প্রায়, কোনদিন বই-এর প্যাকেটও আসে, ঝকঝকে কাগজে মোড়া সব মোটা মোটা বই। বসন্তবাবুও প্রথমে অবাক হয়েছিলেন। -এতো সব বই আনাও পটল ? পটল ওঁকে দেখতে থাকে। ওঁর এই কথাটা তার ভালো লাগে নি। মাঝে মাঝে বুড়ো লোকটা সব কিছুর খোঁজ খবর নিতে চায় আগ্রহের সঙ্গে। এটাকে ভালো চোখে দেখে না। পটল । তার কাজ করবারের অন্ধকার দিকটাকে সে গোপন রাখতে চায়। সেটা নিয়ে কেউ বেশী নড়াচাড়া করুক এটা সে পছন্দ করে না। বসন্তবাবুও অবাক হয়েছেন পটলের চোেখ-মুখের চেহারা বদলে যেতে। মনে হয় তঁর অসাবধানে একটা কথা তিনি বলেছেন যেটা পটল আদৌ পছন্দ করে নি। পটল জবাব দেয়—একটা লাইব্রেরী আছে আমার, তার জন্য কিছু বইপত্র আনাই বিদেশ থেকে । বসন্তবাবু আরও অবাক হন। পটল ইংরেজিতে ছিল একেবারে কাঁচা। দুয়ের ঘর ছাড়িয়ে নম্বর উঠতো না। টেনে হিঁচড়ে থার্ড ডিভিশনে পাশ করেছিল অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে। সেই পটল কিনা পড়ায় এতো মন দিয়েছে এখন, এটা বিশ্বাসও করতে পারেন না। তিনি। চুপ করে থাকেন। এর মনের গভীরে সেই কালো ছায়াটা সব আলোকে গ্রাস করেছে। মনে হয় ওর চাকরী ছেড়ে দেবেন। অন্যায়ের সঙ্গে আপিস করেন নি। সারা জীবন। আজ শেষ বয়সে সমাজের এই ভাঙনের মাঝে তাকে ওরা বাধ্য করেছে। সব হারাতে। এ যেন তঁর অপমৃত্যু। তিলে তিলে এর বেদনা তার মনের সব প্রসন্নতাকে গ্রাস করেছে। বলেন তিনি সুধাময়ীকে। —মাঝে মাঝে মনে হয়। এসব ছেড়ে দিই। আমুর মা। সব কথা বলতে পারেন না বসন্তবাবু স্ত্রীকেও। এ যেন অন্ধকার নরকের কাহিনী। সুধাময়ী তা জানে না। ও ভাবছে তার সংসারের কথা। তাই বলে। —আরও কিছু দিন চালাও, মেয়েটার বিয়ে-থা দিই। আমুর একটা চাকরী-বাকরী হােক, শহরের আশেপাশে ছোট্ট একটা মাথা গোঁজার মত বাড়ি করো--- brの