পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\9ኳ”8 আর্য্যাবর্ত্ত । ৪র্থ বর্ষ-৫ম সংখ্যা । সূচনা। জামাতা-নিধনে শোকার্ত্ত ক্রুদ্ধ জরাসন্ধ যুদ্ধার্থ সজ্জিত হইয়া । আসিল। কৃষ্ণের সহিত তাহার কয়েকবার যুদ্ধও হইল। অবশেষে কৃষ্ণ এই অকারণ লোকক্ষয়কর সংগ্রাম হইতে বিরত হইয়া দ্বারকায় প্রস্থান করিালেন। এই স্থানেই । তাহার জীবন-নাটকের প্রথম অঙ্কে যবনিকাপাত হইল। কৃষ্ণ অৰ্জ্জুনের নিকট স্বীয় জীবন-কাহিনী বিবৃত করিবার সময় বলিয়াছিলেন, “--সত্য পার্থ !! অদ্ভুত-কাহিনী আমার জীবন । মিলি শত্রু মিত্র সব করেছে অদ্ভুততর ; পার্থ, সর্বশেষ করেছে অদ্ভুততম অন্ধ জনরব।” কথাগুলি যথার্থ। কৃষ্ণ অনুপম সৌন্দর্য্যে এবং অতুলনীয় গুণরাশিতে বৃন্দাবনের প্রত্যেক নরনারীর হৃদয়ে আধিপত্য বিস্তার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। কেহ বা তঁহাকে দেবতাবোধে ভক্তি কুসুমে তাহার অৰ্চনা করিত, কেহ বা তাহাকে সখা জ্ঞানে অনাবিল গ্রীতি-ধারায় অতিষিক্ত করিত, কেহবা মেহরসে বিগলিত হইয়া পুত্র বোধে তঁহাকে বক্ষে টানিয়া লইত । “রৈবতকে’ কৃষ্ণ লোকশিক্ষার্থ মানবের ন্যায়ই কার্য্যাদি সম্পন্ন করিয়াছিলেন , অতিলৌকিক ভাবে কিছুই করেন নাই; তবে তিনি আদর্শ মানব, তঁহাতে মনুষ্যত্বের পূর্ণ অভিব্যক্তি। তখন ভারতবর্ষের জাতিভেদ, রাজ্যভেদ, নীতিভেদ, ধর্ম্মভেদ এবং দুর্ব্বলের প্রতি প্রবলের অত্যাচার দেখিয়া কৃষ্ণের হৃদয় ব্যথিত হইল। বিচ্ছিন্ন ভারতকে মহাভারতে পরিণত করিয়া এক ধর্ম্মরাজ্যসংস্থাপন এবং তৎকালপ্রচলিত যাগযজ্ঞবহুল কামনাপূর্ণ ক্রিয়াকাণ্ড ও জড়োপাসনা রহিত করিয়া সনাতন আর্য্যধর্ম্মের ভাস্বরাজ্যোতিঃ বিকীর্ণ করিবার জন্য কৃষ্ণ বদ্ধপরিকর। হইলেন। ভারতের তৎকালীন অবস্থ৷ ’ এমনই হইয়াছিল যে, সমাজ “কর্ণ তুল্য শূরে।” ক্ষত্রিয়ত্ব এবং মহৰ্ষিব্যাসকে ব্রাহ্মণত্ব প্রদান করিতে একান্ত অসম্মত। প্রথমতঃ প্রাচীন আর্য্যগণ গুণানুসারে কর্ম্মবিভাগ করিয়াছিলেন; যে যে কর্ম্মের উপযুক্ত, তাহার হস্তে সেই কর্ম্মের ভার ন্যস্ত করিয়াছিলেন। কালক্রমে এই কর্ম্ম বিভাগ জাতিভেদে পরিণত হইল এবং জাতিভেদ হইতে ঘূণা ও বিদ্বেষের উদ্ভব হইল। দ্রোণাচার্য্য যদি ভক্ত