পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আলোর ফুলকি
৬১

চিড়িয়াখানার উপযুক্ত অদ্ভুত সঙগুলোকে আমার ভারি খারাপ লাগছে, আর একদণ্ড এখানে থাকা নয়, চলে আমরা স্থজনে সেই বনে চলে যাই; সেখানে আলো আর ফুল আর তোমার আমার ভালোবাসা।” কুঁকড়ো ঘাড় নেড়ে বললেন, “না সোনালি, সে হতে পারে না। বিধাতা যেখানে রেখেছেন সেইখেনেই আমাকে থাকতে হবে। আমি জানি এই আবাদটুকুর মধ্যে করবার মতো কাজ আমাদের অনেক রয়েছে, আর, সবার ভালোবাসাও এখানে পাচ্ছি তো।”

 সোনালির মনে পড়ল রাত্রের ঘুটের কথা; কিন্তু ওদের ভালোবাসা যে মোসলমানের মুরগি-পোষার মতে, সেটা বলে কুঁকড়োকে দুঃখ দেওয়া কেন। সে বার বার বলতে লাগল, “না না, চলো দুজনে চলে যাই, আহ সেই বনে যেখানে বসন্ত-বাউর কেবলি বলছে, বউ কথা কও; আর পাতায় পাতায় সোনার অক্ষরে ভালোবাসার গান সব লেখা হচ্ছে সকাল থেকে সন্ধে।”

 এই সময় ওধারটায় কিচিরমিচির শব্দ উঠল, সব পাখিরা ময়ূরকে পাখম ছড়াবার জন্মে পেড়াপিড়ি করছে। চিড়িয়াখানার সব মোরগগুলো তাদের সম্পর্কে পাখমদাদা ময়ূরের চারিদিকে ঘিরে দাড়িয়েছে। অনেক বলা-কওয়াতে ময়ুর পাখম খুলে দেখালেন। পাতিহাস র্হ করে চেয়ে রইল। ময়ূরের কাছে কোটের কাটকুট নমুনো ফ্যাশান চাইতে লেগে মোরগদের মধ্যে হট্টগোল বেধে গেল। সবাই ময়ূরকে আপনার আপনার সাজগোজ দেখিয়ে পাস হতে চাচ্ছে, এক মোরগ অন্তকে ঠেস দিয়েবলছে, “তোমায় দেখতে হয়েছে ওই কাপড়ে,যেন মুড়ঙ্গে স্বপুরি গাছটি” সে আবার তাকে এক ধাক্কা দিয়ে বলছে, “আর তোমারই সাজাটা কী দেখতে হয়েছে? যেনমগের মুল্লুকের আটচালাখানি, শিং বের-করা ছুচোলো।” সবাই যখন সাজসজ্জা দেখাতে মারামারি বাধিয়েছে তখন কুঁকড়ো গলা চাড়িয়ে বলে উঠল,“তাকাও,তাকাও, ওদিকে তাকাও।” কুঁকড়োর কথামত সব মোরগ মায় ময়ুর হাস আর যত দেমাকে পোশাকী পাখি সবাই সেই কাপড়-ঝোলানো খড়ের কুশে-পুতুলটার দিকে চেয়ে দেখলে, হাওয়াতে সেইখড়ের কাঠামোর কামিজের হাতাটা লটপট ক’রে যেন তাদেরই দেখিয়ে কী বলতে যাচ্ছে। ভয়ে সব পোশাকী পুস্তি পাখিদের মুখ চুন হয়ে গেল। কুঁকড়ো হেঁকে বললেন, “তাকাও, তাকাও, উনি তোমাদের আশীর্বাদ করছেন।” মোরগগুলো কুঁকড়োর দিকেই চেয়ে রইল, তখন কুঁকড়ো বললেন, “ওই