পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৭৪
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ।

উপর আমি চোখ্‌ বুলাইয়া গিয়াছি, কেবল সেই সব পদার্থের ছায়া-চিত্রই আমার নিকট হইতে প্রত্যাশা করে।

 বিশেষতঃ, আমার এই অল্পদিনের শিক্ষাদীক্ষার পর, আমি অন্যকে শিক্ষা দিতে পারিব এ কথা আমি কি করিয়া বিশ্বাস করি? আমি এখন যাহা বলিতে পারিব তাহাতে শুধু অন্যের চিত্তস্থৈর্য্য নাশ হইবে—হয়ত তাহা কাহাকে “দ্বারদেশের বিভীষিকা’’ পর্য্যন্ত লইয়া যাইবে—তাহার ওদিকে আর নহে।

 তাছাড়া, আমি এখনও ভারতকে আবিস্কার করিতে পারি নাই, যেহেতু বেদকে এখনও আবিষ্কার করিতে পারি নাই; একথা সত্য, কয়েক বৎসর হইতে, আমাদের মধ্যে,—অসম্পূর্ণ হইলেও—ঐ অলৌকিক গ্রন্থের অনুবাদ প্রচারিত হইতে আরম্ভ হইয়াছে।

 বর্তমান শতাব্দিতে যাঁহাদের সংখ্যা অসংখ্য, আমার সেই সব অজ্ঞাত বন্ধুদের প্রতি আমি শুধু এই কথা বলিতে চাহি;—এই বৈদিক মতের মধ্যে কতটা সান্ত্বনা আছে, তা প্রথম দৃষ্টিতে সহসা উপলব্ধি হয় না।

 এবং উহাতে যে সান্ত্বনা পাওয়া যায়; তাহা ঈশ্বর-প্রকাশিত ধর্ম্মাদির সান্ত্বনার ন্যায়, যুক্তির দ্বারা বিনষ্ট হইবার নহে।

 এই বেদগ্রন্থ একজনের প্রণীত নহে—ইহা একটি সমস্ত জাতির সঙ্কলিত গ্রন্থ; সর্ব্বোৎকৃষ্ট ও পরমাশ্চর্য্য বিষয়সমূহের পাশাপাশি, ইহার মধ্যে, অনেক অস্পষ্টতা, অসঙ্গতি ও ‘ছেলেম’ কথাও আছে; এই গ্রন্থগুলি অরণ্যের ন্যায় নিবীড় ও রসাতলের ন্যায় অতলস্পর্শ। যাঁহারা নির্জ্জনে বসিয়া অবিচলিতচিত্তে এই গ্রন্থগুলির অনুশীলন করেন, সেই বারাণসীর তত্ত্বজ্ঞানীদের সাহায্যেই বোধ হয় উহার মধ্যে আমরা একটু প্রবেশ লাভ করিতে পারি। তাঁহাদের পূর্ব্বে, এই অতলস্পর্শের দ্বার আর কেহ উদ্‌ঘাটিত করে নাই; এই সব কথা আমি আর কোথাও শুনি নাই; জীবন ও মৃত্যুর রহস্য সম্বন্ধে, বারাণসীর তত্ত্বজ্ঞানীরা যে উত্তর প্রদান