করিতেছি।” এই বলিয়া আমি সেই লোকটীকে সেই গোয়ালার বাড়ীতে পাঠাইয়া দিলাম। তাহাকে কহিলাম, “তুমি গিয়া সেই লোক দুইটীকে দেখিয়া আইস—তাহার সাহেব কি না?” আমার কথা শুনিয়া সে দেখিতে গমন করিল। কিন্তু তাহার আসিতে বিলম্ব হওয়ায়, হাবিৎ আমাকে কহিলেন, “বাবু! তুমি সব নষ্ট করিলে! আমি গমন করিতে চাহিলাম, তুমি আমাকে গমন করিতে দিলে না; এখন নিশ্চয়ই তাহারা আমাদের কথা জানিতে পারিয়া পলায়ন করিয়াছে।” সাহেবের কথা শুনিয়া আমার রাগ হইল। কিন্তু মনের রাগ মনে রাখিয়া কহিলাম, “চল সাহেব, আমার সঙ্গে, আমি তোমাকে সেই স্থানে লইয়া যাইতেছি।” এই বলিয়া সেইস্থানে লোকদিগকে জিজ্ঞাসা করিয়া সেই গোয়ালার বাড়ীতে গমন করিলাম। দেখিলাম, সেইস্থানে দুইজন অতিথি রন্ধন করিতেছে। তাহাদিগকে দেখিয়া সাহেবকে কহিলাম, “হাবিৎ! এখনও উহারা তোমার আসিবার সংবাদ, পায় নাই বা পলায় নাই; তুমি অনায়াসে উহাদিগকে এখনই গ্রেপ্তার করিতে পার।” সাহেব আমার কথা শুনিয়া দ্রুতপদে তাহাদিগের নিকট গমন করিল। দেখিল, দুইজন পশ্চিম দেশীয় সন্ন্যাসী, সেই গোয়ালার গোয়ালঘরে বসিয়া রন্ধন করিতেছে। এই অবস্থা দেখিয়া সাহেবদ্বয় বিশেষ লজ্জিত হইলেন, ও উহাদিগকে গালি দিয়া সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিলেন।
পাতা:ইংরেজ ডাকাত - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪১
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
দারোগার দপ্তর, ৩৩ম সংখ্যা।