গমনকালে মনে করিলাম,—‘আমরা যত লোক গমন করিতেছি এত লোকের আবশ্যক কি? দশ কুড়িজন হইলেই যথেষ্ট।’ কিন্তু পুলিসে গিয়া কি দেখিলাম? যাহা আমরা একবারও মনে ভাবি নাই, তাহাই দেখিলাম। দেখিলাম, ইংরাজপুলিস-কর্ম্মচারী যত আছেন, সকলেই সেইস্থানে উপস্থিত; দেখিলাম, আদেশ-প্রার্থী হইয়া সকলেই সেই প্রাঙ্গনে দণ্ডায়মান। পুলিসের পোষাক কাহারও পরিধানে নাই, সকলেই আপন আপন ইচ্ছানুযায়ী পরিচ্ছদে শোভিত হইয়াছেন। ইহাদের সংখ্যা প্রায় এক শত হইবেক। আমরাও সেই প্রাঙ্গনের একপার্শ্বে দণ্ডায়মান হইলাম। সেই সময় আমাদের বড় সাহেব তাঁহার গৃহ হইতে বহির্গত হইয়া, আমাদিগের নিকট আসিলেন। তাঁহার হস্তে একখানি কাগজ ও একটী পেন্সিল। সেইস্থানে যতগুলি কর্ম্মচারী ছিলেন, তিনি সকলের নাম লিখিয়া লইয়া, জেলের পলাতক কয়েদীদ্বয়ের অনুসন্ধান করিবার নিমিত্ত প্রত্যেককেই এক একদিকে যাইতে আদেশ প্রদান করিলেন। যিনি যেমন আদেশ পাইতে লাগিলেন, তিনি তখনই আদেশ-অনুযায়ী স্থানাভিমুখে গমন করিতে লাগিলেন। কাহারও উপর আদেশ হইল, হাবড়া হইতে গাড়িতে উঠিয়া বর্দ্ধমান গিয়া থাকিবেন, এবং সেইস্থানে যত গাড়ি থামিবে, প্রত্যেক গাড়িতেই উহাদিগের অনুসন্ধান করিবেন। কেহ বর্দ্ধমানে নামিয়া পদব্রজে হাবড়া পর্যন্ত আগমন করিবেন; কেহ হাবড়া হইতে পদব্রজে বর্দ্ধমান গমন করিবেন। কেহ ইষ্টারণ বেঙ্গল রেলওয়ে গমন করিয়া নৈহাটী ষ্টেশনে থাকিবেন, কেহ নৈহাটী হইতে হাঁটিয়া আসিবেন, কেহ নৈহাটীতে
পাতা:ইংরেজ ডাকাত - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইংরেজ ডাকাত।
৫