দশম পরিচ্ছেদ : আশার প্রদীপ \ সে দিন এই পর্য্যস্ত। পরদিন সুভাষিণী আমাকে আবার নিভৃতে লইয়া গেল । বলিল, “বীপের নাম বলিতে হইবে।” তাহা বলিলাম । “র্তার বাড়ী যে গ্রামে তাহাও বলিতে হইবে।” তাও বলিলাম । সু। ডাকঘরের নাম বল । আ । ডাকঘর । ডাকঘরের নাম ডাকঘর । স্ব। দূর পোড়ারমুখী । যে গ্রামে ডাকঘর, তার নাম । আমি । তা ত জানি না । ডাকঘরই জানি । সু। বলি, যে গ্রামে তোমাদের বাড়ী, সেই গ্রামেই ডাকঘর আছে,ন অন্য গ্রামে ? আমি । তা ত জানি না । স্বভাষিণী বিষন্ন হইল। আর কিছু বলিল না। পরদিন সেইরূপ নিভৃতে বলিল, “তুমি বড় ঘরের মেয়ে, কত কাল আর রাধিয়া খাইবে ? তুমি গেলে আমি বড় কাদিৰ— কিন্তু আমার সুখের জন্য তোমার মুখের ক্ষতি করি, এমন পাপিষ্ঠ। আমি নই। তাই আমরা পরামর্শ করিয়াছি—” কথা শেষ না হইতে হইতে আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “আমরা কে কে ?” সু। আমি আর র-বাবু। র-বাবু কি না রমণ বাবু। এইরূপে স্বভাষিণী আমার কাছে স্বামীর নাম ধরিত। তখন সে বলিতে লাগিল, “পরামর্শ করিয়াছি যে, তোমার বাপকে পত্র লিখিব যে, তুমি এইখানে আছ, তাই কাল ডাকঘরের কথা জিজ্ঞাসা করিতেছিলাম।” আমি । তবে সকল কথা তাহাকে বলিয়াছ ? স্ব। বলিয়াছি—দোষ কি ? আমি । দোষ কিছু না । তার পর ? সু। এখন মহেশপুরেই ডাকঘর আছে বিবেচনা করিয়া পত্র লেখা হইল। আমি । পত্র লেখা হইয়াছে না কি ? - ५ । ईं। । আমি আছাদে আটখানা হইলাম। দিন গণিতে লাগিলাম, কত দিনে পত্রের উত্তর আসিবে। কিন্তু কোন উত্তর আসিল না। আমার কপাল পোড়া—মহেশপুরে কোন ডাকশ্বর
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৩
অবয়ব