পাতা:ইন্দিরা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৩).pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
ইন্দিরা।

ঘোমটার ভিতর হইতে তাঁহার প্রতি তীব্র দৃষ্টিতে চাহিয়া আছি। পুরুষে বলিয়া থাকেন, যে অন্ধকারে প্রদীপের মত, অবগুণ্ঠন মধ্যে রমণীর কটাক্ষ অধিকতর তীব্র দে- খায়। বোধ হয়, ইনিও সেইরূপ দেখিয়া থাকিবেন। তিনি একটু মাত মৃদু হাসিয়া, মুখ নত করিলেন। সে হাসি কেবল আমিই দেখিতে পাইলাম। আমি সমুদায মাংস তাঁহার পাতে ফেলিয়া দিয়া চলিয়া আসিলাম।

 আমি একটু লজ্জিতা, একটু সুখী হইয়া আসিলাম। লজ্জার মাথা খেয়ে বলিতে হইল- আমি নিতান্ত একটুকু সুখী হইয়া আসিলাম না। আমার নারী জন্মে প্রথম এই হাসি- আর কখন কেহ আমাকে দেখিয়া মধুর হাসি হাসে নাই। আর সকলের হাসি বিষ লাগিয়াছিল।

 এতক্ষণ বোধ হয়, পতিব্রতা মগুলী আমার উপর ভ্রূভঙ্গী করিতেছেন এবং বলিতেছেন, “পাপিষ, এ যে অনু- রাগ।” আমি স্বীকার করিতেছি, এ অনুরাগ। কিন্তু আমি সধবা হইয়াও জন্মবিধবা। বিবাহের সময়ে একবার মাত্র স্বামিসন্দর্শন হইয়াছিল-সুতরাং যৌবনের প্রবৃত্তি সকল অপরিতৃপ্ত ছিল। এমন গভীর জলে ক্ষেপণী নি- ক্ষেপেই যে তরঙ্গ উঠিবে, তাহাতে বিচিত্র কি?

 আমি স্বীকার করিতেছি যে এ কথা বলিয়া আমি দোষ