পাতা:ইন্দিরা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৩).pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইন্দিরা।

 লোক সংখ্যা অধিক দেখিয়া আমার সঙ্গের লোকেরা পিছাইয়া পড়িতে লাগিল। তখন আমি নিতান্ত হতাশ্বাস হইয়া মনে করিলাম, লাফাইয়া পড়ি। কিন্তু বাহকেরা যে রূপ দ্রুত বেগে যাইতেছিল—তাহাতে পাল্কী হইতে নামিলে আঘাত প্রাপ্তির সম্ভাবনা। বিশেষতঃ এক জন দস্যু আমাকে লাঠি দেখাইয়া কহিল যে, নামিবি ত মাথা ভাঙ্গিয়া দিব।” সুতরাং আমি নিরস্ত হইলাম।

 আমি দেখিতে লাগিলাম যে, এক জন দ্বারবান অগ্রসর হইয়া আসিয়া পাল্কী ধরিল, তখন এক জন দস্যু তাহাকে লাঠির আঘাত করিল। সে অচেতন হইয়া। মৃত্তিকাতে পড়িল। তাহাকে আর উঠিতে দেখিলাম না। বোধ হয়, সে আর উঠিল না।

 ইহা দেখিয়া অবশিষ্ট রক্ষিগণ নিরস্ত হইল। বাহকেরা আমাকে নির্ব্বিঘ্নে লইয়া গেল। রাত্রি এক প্রহর পর্য্যন্ত তাহার এই রূপ বহন করিয়া পরিশেষে পাল্কী নামাইল। দেখিলাম, সে স্থান নিবিড় বন-অন্ধকার। দস্যুরা একটা মশাল জ্বালিল। তখন আমাকে কহিল, “তোমার যাহা কিছু আছে, দাও—নহিলে প্রাণে মারিব।” আমার অলঙ্কার বস্ত্রাদি সকল দিলাম—অঙ্গের