বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ইয়ুরোপে তিন বৎসর.djvu/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জলপপে গমন।

যাইবে না শুনিয়া উল্লিখিত সৌন্দর্য্যশালী নগর সন্দর্শনে যাত্রা করিলাম। দেখিলাম পথ সকল প্রশস্ত, গৃহ সমুদায় বৃহৎ ও সুগঠন। আমরা শকটারোহণ পূর্ব্বক এক সুরম্য উদ্যান দিয়া পম্‌পীর স্তম্ভ দেখিতে গেলাম। উহার চতুর্দ্দিক অনাবৃত, মধ্যভাগে মর্ম্মর-প্রস্তর-বিনির্ম্মিত ৬৫ হস্ত উচ্চ সেই স্তম্ভ! উহা নির্ম্মল আকাশ স্বরূপ চিত্রপটে চিত্রিত এক গৌরবান্বিত ছবির ন্যায় বিরাজ করিতেছে। মিসরদেশীয় পৌত্তলিকতার সাক্ষ্য স্বরূপ দেবতাগণের প্রতিমূর্ত্তির কতই ভগ্নাবশেষ ঐ স্তম্ভের চতুষ্পার্শ্বে বিকীর্ণ রহিয়াছে এবং শত শত কি সহস্র সহস্র বৎসর পর্য্যন্ত তদবস্থায় পতিত আছে। যে দিকে নয়ন ফিরান যায়, সেই দিকেই কেবল ভগ্নাবশেষ ভিন্ন আর কিছুই দেখা যার না। যে জাতি একসময়ে সভ্য ও সৌভাগ্যশালী ছিল, তাহার গৌরবের পরিচয়-স্থান রাজপ্রাসাদ, মন্দির ও স্তম্ভ, রাজদরবার ও ধর্ম্মোৎসব প্রভৃতির চিহ্ন দর্শন করিয়া তৎসমুদায়ের নশ্বরত্ব মনে পড়; এবং জ্ঞান হয় যে, মনুষ্যের গৌরব রবমাত্র ও অহঙ্কার উন্মত্ততা ভিন্ন আর কিছুই নহে। যখন আমরা সেই স্থান ত্যাগ করিলাম, তখন প্রায় অন্ধকার হইয়াছে, এবং যত আমদিগের শকট চলিতে লাগিল, ততই ঐ স্তম্ভ উচ্চতর ও সন্ধ্যাকালীন ঈষৎ অন্ধকারাবৃত আকাশে খোদিত ছবির ন্যায় বোধ হইতে লাগিল। এস্থান হইতে আমরা ক্লিওপেট্‌রার স্তম্ভ দেখিতে গেলাম। ইহাও মর্ম্মর-প্রস্তর-বিনির্ম্মিত, প্রায় ৫০ হস্ত উচ্চ, ও উহার অগ্রভাগ সূচাগ্রেরে ন্যায়। সন্ধ্যার সময় অতি সুখে পথে পথে ভ্রমণ করণানন্তর আমরা স্টীমারে আগত হইলাম; এ সময়ে মিসরদেশে বড় শীত, এমন কি পৌষ মাস